ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার মেধাবী ছাত্র মো. শাহাদত হোসেন দিনমজুরের কাজ করে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেও উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার পিতৃহীন শিবলী খাতুনের ইচ্ছা মেডিক্যালে পড়ার। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ারই সামর্থ্য নেই তার। এদিকে কুড়িগ্রামের উলিপুরের আল আমিন অলি হোসেনের স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইতপুর উত্তরপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র আবু সাইদের ছেলে শাহাদত হোসেন। মা শাহিদা খাতুন গৃহিণী। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ তার বাবা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে অসুস্থ। দিনের বেলায় অন্যের জমিতে ও রাতে মুরগির খামারে দিনমজুরের কাজ করে লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসার চালায় শাহাদত। সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ ৪.৩৯ পেয়ে পাস করেছে শাহাদত। স্বপ্ন তার উচ্চশিক্ষা অর্জন করে ভালো চাকরি করবে।
শাহাদত হোসেন বলে, ‘অর্থাভাবে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করা সম্ভব হবে না। কেউ যদি লেখাপড়ার জন্য সহযোগিতা করেন, তাহলে আমার স্বপ্ন পূরণ হবে। ’
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মেধাবী শিবলী খাতুনের ইচ্ছা মেডিক্যালে পড়ার। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে কলেজে ভর্তি নিয়েই দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে পিতৃহীন পরিবারে। মুজিবনগরের ভবরপাড়া গ্রামের মৃত জিয়ারত শেখ ও মর্জিনা খাতুনের একমাত্র মেয়ে শিবলী খাতুন এ বছর মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
শিবলী বলে, ‘আমার যখন ছয় বছর বয়স তখন হার্ট অ্যাট্যাক করে দিনমজুর বাবা মারা গেছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজে ছোট ছোট বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে কিছুটা নিজের খরচ জোগাতাম। ’মেডিক্যালে পড়ার ইচ্ছা জানিয়ে শিবলী বলে, ‘কষ্টের ফল আমি পেয়েছি, তাই আমি অনেক খুশি। এখন মনে হয়, আমি যদি একটা ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারতাম, তবে আরো এগিয়ে যেতে পারতাম। ’ শিবলীর মা মর্জিনা খাতুন সেলাই মেশিনে কাজ করে শিবলীর লেখাপড়ার খরচ জোগান। তাঁর পক্ষে সম্ভব না মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির টাকা জোগাড় করা।
এদিকে কুড়িগ্রামের উলিপুরের আল আমিন অলি হোসেনের ইচ্ছা ভবিষ্যতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার। তবে এই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েও পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। আল আমিন উলিপুর উপজেলার পৌরসভার নারিকেল বাড়ি গ্রামের হতদরিদ্র রিকশাচালক জহুরুল হকের ছেলে।