বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা নিয়ে গভীর রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল এবং শহীদ রফিক-জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর। এর মধ্যে চারজনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পঠানো হয়েছে।
উভয় হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১২ জুলাই ইতিহাস বিভাগের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক ছাত্র কাজী মহিউদ্দীন মিরাজ ও তার বান্ধবী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন ইংরেজি বিভাগের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র মো. রাফি ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিরাজের বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করেন। এই ঘটনার জেরে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় মিরাজ তার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের বন্ধুদের নিয়ে রাফিকে দুই হলের মধ্যবর্তী জায়গা রবীন্দ্র চত্বরে ডাকেন। তখন রাফিকে তার সঙ্গে থাকা বন্ধুদেরও ডাকতে বলে মিরাজ। পরে রাফি তার হলের বন্ধুদের ডাকেন। রাফির বন্ধুরা এলে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জেরে রাত আড়াইটায় দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি পটকা বাজি ফোটানো হয়। এক ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কেউ ঘটনাস্থলে আসেননি বলে জানা যায়।
এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভোর পৌনে ৫টার দিকে উভয় হলের দায়িত্বরত শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা শাখার কয়েকজন সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। উভয় হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুল হাদান তালুকদার বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই অনাকাঙ্খিত, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। অন্য একটি জায়গার ঘটনা এখানে টেনে আনায় এতো বড় ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনার নিন্দা জানাই। যারা ছাত্রসুলভ আচরণ করছে না তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিচার হওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রনি হোসাইন বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। এ ঘটনায় আমরা একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দেব। এছাড়া ঘটনার অধিকতর তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।