বাবা শরিফুল হক মিল্টনের পা ছুঁয়ে দোয়া নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেরাজ হকের যাওয়ার কথা ছিল পরীক্ষার কেন্দ্রে। অথচ আজ উচ্চ মাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরোতে বাড়ির আঙ্গিনায় বাবার লাশ রেখেই পরীক্ষায় বসতে হয়েছে তাকে।
বৃহস্পতিবার (০২ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সাইফুর রহমান সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের ৩নং কক্ষে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
জানা যায়, বুধবার মধ্য রাতে হার্ট অ্যাটাকে মেরাজ হকের বাবা মৃত্যুবরণ করেন নিজ বাড়ীতে।
সরজমিনে পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখা যায়, মেরাজ এক হাতে চোখ মুছে আর অন্য হাতে কলম দিয়ে লিখছেন পরীক্ষার খাতায়। মাঝে মধ্যেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছেন। সে ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজ থেকে কারিগরী শাখা থেকে এইচ এসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে। তার রোল নম্বর ৮৩১৪৪৪। ওই পরীক্ষার্থীর বাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের হকটারী এলাকায়।
পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ মো.রফিকুল ইসলাম জানান,পরীক্ষার্থী মেরাজ হকের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা তাকে সান্তনা ও উৎসাহ দিয়েছি পরীক্ষা দিতে। তবে তার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।
সহপাঠী রবিউল ইসলাম জানান, মেরাজ হক পরীক্ষা দিতে গিয়ে বাবার শোকে পুরো সময়ই কেঁদেছে আর লিখেছে খাতায়। আর এ দৃশ্য দেখে তাঁর সহপাঠী, শিক্ষকসহ পুরো কেন্দ্রেই নেমে আসে শোকের ছায়া।
স্বজন পলাশ হোসেন জানান, বুধবার রাত ১২টার দিকে মেরাজের বাবা হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুবরণ করেন। বাবাকে হারানোর পর ভেঙে পড়লেও কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষার হলে গেছে মেরাজ হক। আমরা শান্তনা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য পাঠিয়েছে। আড়াইটার দিকে মিল্টনের লাশ পারিবারিক ভাবে দাফন করা হয়েছে।