ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায়বারবার রক্ষা পাচ্ছে সামসুল হক খান স্কুল

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি নিয়েছে রাজধানীর ডেমরার সামসুল হক খান স্কুল। এ প্রতিষ্ঠানটি চলতি শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৮ হাজার টাকার বেশি ফি নিয়েছে। এর আগেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছিলো। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। 

প্রাণঘাতী করোনার ছোবলের মধ্যে এক সঙ্গে তিন মাসের বকেয়া বেতন ও উন্নয়ন ফি পরিশোধে অভিভাবকদের দেয়া কর্তৃপক্ষের আল্টিমেটাম দিয়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি। আবার প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ পরিচয় দেয়া প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে অন্য একটি কলেজ খুলে এক কর্মচারীর অ্যাকাউন্টে ২৪ কোটি টাকার বেশি জমা করার অভিযোগ আছে। এতো অভিযোগের পরও কোনো ব্যবস্থা হয় না প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

 

জানা গেছে, ডেমরার সামসুল হক খান স্কুল নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৮ হাজার টাকার বেশি ফি নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা বেসরকারি স্কুলের ভর্তি নীতিমালা অনুসারে, রাজধানীর ননএমপিও বা আংশিক এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো বাংলা ভার্সনে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ মোট ৮ হাজার টাকা নিতে পারবে। কিন্তু সামসুল হক খান স্কুল তার বেশি নিয়েছে। খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে তা উঠে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধানকে শোকজ করা ও তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে বলেছে মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হলে প্রতিষ্ঠানটির এমপিও বাতিল হওয়ার কথা আছে। কিন্তু তা হচ্ছে না। 

গত বছরের ডিসেম্বরে সামসুল হক খান উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছিলো। সে মাসেই তা তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। অভিযোগ তদন্ত করে ফি অতিরিক্ত ফি আদায়ের সত্যতা পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

দেড় মাস আগে গত ২ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে বলেছিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উপসচিব মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছিলো, প্রতিষ্ঠানটি নির্ধারিত ফিয়ের অতিরিক্ত ফি আদায় করেছে। তাই প্রতিষ্ঠানটির প্রধানকে শোকজ ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিলো অধিদপ্তরকে। কিন্তু দেড় মাস সময় পার হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। 

এর আগে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ডেমরার সামসুল হক খান স্কুল ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি নিয়েছিলো। কিন্তু ঢাকা বোর্ড প্রতিষ্ঠানটিকে শোকজ করেই দায় এড়িয়েছিলো। 

জানাতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তারা  সামসুল হক খান স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার চিঠি পেয়েছেন। এ বিষয়ে ‘শিগগিরিই’ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে, সে ব্যবস্থা কবে হবে তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি এ কর্মকর্তা। 

এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে সামসুল হক খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে অতিরিক্ত ফি নেননি বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন। নিজেকে অধ্যক্ষ পরিচয় দেয়া এ প্রধান শিক্ষক আরো দাবি করেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তদন্তে এসে ভুল বুঝেছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা - dainik shiksha বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি - dainik shiksha জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল - dainik shiksha দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি - dainik shiksha কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058770179748535