বাসাবাড়ির মতো ব্যবহার হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘসময় বন্ধ থাকায় ময়মনসিংহ বিভাগের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল হয়ে গেছে।

স্কুল ভবন বা প্রাঙ্গণ গরু-ছাগল রাখার জায়গা হয়েছে। খড় রাখা হয়েছে কোনো কোনো স্কুলের শ্রেণিকক্ষে। নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে কোনো স্কুলের মাঠে। আবার যানবাহনের স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে কোনো স্কুলের মাঠ বা প্রাঙ্গণ।

কোনো কোনো স্কুলের মাঠ ও আঙিনায় ঝোপঝাড় হয়ে ভূতুড়ে জায়গায় রূপ নিয়েছে। আর এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে স্থানীয় বখাটে ও মাদকসেবীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তাদের আখড়ায় পরিণত করেছে।

এদিকে করোনার কারণে এই বিভাগের চার জেলায় কিন্ডারগার্টেন ও নার্সারি স্কুল বন্ধ থাকায় প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ময়মনসিংহ জেলার ২ হাজার ৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থা খুবই খারাপ। শহরের একটি স্কুল ভবনের একাংশ গুদাম হিসাবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বিদ্যানন্দ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ধান মাড়াইয়ের কাজ শেষে বড় বড় খড়ের স্তূপ গড়ে তুলে গরু-ছাগল চরানো হচ্ছে। এই বিদ্যালয়ের টিনের চাল মরীচিকা ধরে নুয়ে পড়েছে। ভালুকার স্কুলগুলোরও একই অবস্থা।

গৌরীপুর উপজেলার ১নং মইলাকান্দা ইউনিয়নের লামাপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরো মাঠ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। ত্রিশালের হরিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাখা হচ্ছে ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা।

স্কুল মাঠটি গাড়ির গ্যারেজে পরিণত হয়েছে। গফরগাঁও উপজেলায় ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও নিুমাধ্যমিকে ২৫ বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় এবং ধারাবাজার ইজারাদার কার্যালয়। জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জের কোনো কোনো বিদ্যালয় ভবন লাকড়ি, খড়সহ বিভিন্ন জিনিস রাখার জায়গায় পরিণত হয়েছে।

শেরপুর জেলার বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় এখন সুনসান নীরবতা। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চসহ অন্যান্য আসবাবপত্রে ধুলোবালির আস্তরণ পড়েছে। মাকড়সা, তেলাপোকাসহ বিভিন্ন পোকামাকড় বাসা বেঁধেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের মাঠে ঘাস ও আগাছা গজিয়ে ঝোপের মতো হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে গরু চরছে।

নেত্রকোনা জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন ভূতের বাড়ি। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেঁধে রাখা হয় গরু-ছাগল। এই জেলার মোহনগঞ্জের কোনো কোনো বিদ্যালয় বাসাবাড়ির মতো ব্যবহার হচ্ছে। কেউ বিদ্যালয়কে নৌকা বানানোর কারখানা বানিয়েছেন। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অজুহাতে ঠিকাদারের লোকজন বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম বছরের পর বছর দখল করে রেখেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনায় শ্রেণির কাজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার কথা। কিন্তু তারা সেই দায়িত্ব পালন করছেন না। আর এ কারণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আজ এই দশা। তবে কেউ কউ বলছেন, এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়েরও গাফিলতি আছে। মন্ত্রণালয় যদি স্থানীয় প্রশাসন তথা শিক্ষা অফিসগুলোকে জোর তাগিদ দিত, তাহলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023910999298096