বিদ্যুতের নতুন সংযোগ নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নীতিমালায় ফের নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে সৌরবিদ্যুৎ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এবার ‘লোড’-এর পরিবর্তে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বাড়ির ছাদ। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের বাড়ির ছাদের আয়তন এক হাজার বর্গফুট হলেই নেট মিটারিংয়ের আওতায় সৌর প্যানেল বসাতে হবে। সম্প্রতি এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যুতের নতুন সংযোগে সৌরবিদ্যুৎ বাধ্যতামূলক করা হলেও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে তা বাতিল করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে একাধিকবার বিদ্যুৎ সচিব ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিচ্ছে। এর ভিত্তিতেই গ্রাহক পর্যায়ে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে গ্রিডের ওপর চাপ কমবে। নতুন নির্দেশনা কতটুকু কার্যকর হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে কর্মকর্তারা জানান, এবার এটি বাস্তবায়নে সব বিতরণ কোম্পানিকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো গ্রাহক নির্দেশনা না মানলে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে না। নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, গ্রাহকের ভবনের ছাদে এক হাজার বর্গফুট জায়গা থাকলেই নেট মিটারিং পদ্ধতিতে রুফটপ সোলার প্যানেল স্থাপন করতে হবে।
এ ছাড়া আবাসিক গ্রাহকরা সিঙ্গেল ফেজ সংযোগে আগ্রহী হলে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে পারবে। থ্রি ফেজ সংযোগের ক্ষেত্রে ১০ কিলোওয়াট বা তদূর্ধ্ব লোড বরাদ্দপ্রাপ্ত গ্রাহককে কমপক্ষে এক কিলোওয়াট নেট মিটারিং সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকের জন্য ১০ বা তার চেয়ে বেশি কিলোওয়াট লোড বরাদ্দপ্রাপ্ত নেট মিটারিং অনুসরণ করে অনুমোদিত লোডের ১০ শতাংশ ক্ষমতার সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। তবে ১০ কিলোওয়াট লোডের বেশি বরাদ্দপ্রাপ্ত গ্রাহকরা আগ্রহী হলে রুফটপ সোলার সিস্টেম বসাতে পারবেন এবং স্থাপিত সিস্টেমের ক্ষমতা এক কিলোওয়াটের বেশি হলে নেট মিটারিং নির্দেশিকা অনুসরণে তা করতে হবে। তবে বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য বলা হয়েছে, সিঙ্গেল ফেজ সংযোগের ক্ষেত্রে আগ্রহী হলে সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে পারবে। তবে থ্রি ফেজ সংযোগের ক্ষেত্রে ১০ কিলোওয়াট বা তদূর্ধ্ব লোড বরাদ্দপ্রাপ্ত গ্রাহকদের কমপক্ষে এক কিলোওয়াটের নেট মিটারিং সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া পুরোনো গ্রাহকরা বরাদ্দকৃত লোড বাড়াতে চাইলে তাদেরও অতিরিক্ত লোডের জন্য নেট মিটারিংয়ের নতুন এই গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য, গ্রাহকের সৌর প্যানেলে উৎপাদিত বিদ্যুতের অতিরিক্ত অংশ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে নেট মিটারিং। আবার গ্রাহক সৌর বিদ্যুৎ না পেলে গ্রিড থেকে সমপরিমাণ বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এতে গ্রাহকের বিল অন্তত ৪০ শতাংশ কমতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।