অবশেষে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি সংসদ সদস্যরা। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সংসদ ভবনে স্পিকারের দপ্তরে গিয়ে তারা পদত্যাগ পত্র জমা দেন। বিএনপি দলীয় ৭ সংসদ সদস্য সংবিধানের ৬৭(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
সংবিধানের ৬৭(২) অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনো সংসদ সদস্য স্পিকারের নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন, এবং স্পিকার কিংবা স্পিকারের পদ শূন্য থাকিলে বা অন্য কোনো কারণে স্পিকার স্বীয় দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে ডেপুটি স্পিকার যখন ওই পত্র প্রাপ্ত হন, তখন থেকে ওই সদস্যের আসন শূন্য হইবে।
তারা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার, বগুড়া-৪ আসনের মো. মোশাররফ হোসেন, বগুড়া–৬ আসনের জি এম সিরাজ, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান এবং সংরক্ষিত আসনের রুমিন ফারহানা। এর মধ্যে মো. হারুনুর রশীদ বিদেশে থাকায় আজ তিনি উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় সংসদে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে তাদের স্বাক্ষর করা পদত্যাগপত্র নিয়ে জমা দিয়েছেন রুমিন ফারহানা।
পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে তারা সাংবাদিকদের বলেন, সংসদে জনগণের পক্ষে কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। এ জন্য সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার করতেই একাদশ জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
সংসদ ভবনে প্রবেশের আগে বিএনপির সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সংসদে আসার সিদ্ধান্ত মোটেও ভুল ছিলো না। তবে এখন আমাদের দলের সিদ্ধান্তমতে আমরা সবাই পদত্যাগ করতে এসেছি। স্পিকারের কাছে আমরা আজ পদত্যাগপত্র জমা দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি গতকাল ব্যক্তিগতভাবে স্পিকারকে ফোন দিয়ে পদত্যাগের কথা জানিয়েছি। মেইলে পদত্যাগপত্র দিয়েছি। স্পিকার আমাকে বলেছেন, তিনি এই বিষয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে অবগত হয়েছেন।’
এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির সমাবেশ থেকে একে একে তারা পদত্যাগের বিষয়টি তাদের বক্তব্যে নিশ্চিত করেন। তারা বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তারা পদত্যাগপত্র ই মেইলে গতকালই পাঠিয়ে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ভোটে অংশ নিয়েছিল। সেই নির্বাচনে বিএনপির ছয়জন বিজয়ী হন, পরে সংরক্ষিত নারী আসনের একটি পায় দলটি। যদিও তখন নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে শুরুতে বিএনপি জানিয়েছিল, তারা সংসদে যাবে না। পরে সিদ্ধান্ত বদলে শপথ নেন দলটির সংসদ সদস্যরা। একাদশ জাতীয় সংসদ শুরুর চার বছর পর সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে সংসদ থেকে বেরিয়ে গেল দলটি। তবে এই সংসদের মেয়াদ এক বছরের বেশি সময় বাকি আছে।