দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে কালনী নদীর তীরের উজানধলে কালোত্তীর্ণ লোক গানের স্রষ্টা বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমকে গানে গানে ও শ্রদ্ধায় স্মরণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী ‘শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব’। গতকাল শুক্রবার এ উৎসব শেষ হয়। স্থানীয় মানুষের পাশপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের বাইরে থেকেও আসা ভক্ত-সুধীজনেরা অংশ নেন এই উৎসবে। বাউল সম্রাটের ১০৯তম জন্মদিন উপলক্ষে শাহ আবদুল করিম পরিষদ আয়োজিত উৎসবে এবারো সহযোগিতায় ছিলো দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ।
শনিবার বিকাশের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বাংলা লোকগানের এই বাউলসম্রাটের স্মরণে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এ উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার শাহ আবদুল করিম পরিষদের সভাপতি ও বাউল সম্রাট পুত্র শাহ নুর জালালের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। সম্রাটের স্মরণে আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধনীতে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, বিকাশের হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স হুমায়ুন কবিরসহ অন্যান্যরা।
আলোচনার পরপরই বাউলসম্রাটের ভক্ত-অনুরাগীরা তার সৃষ্টিকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে তারই গান গেয়ে তাকে স্মরণ করেন। ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান...’, ‘বন্ধে মায়া লাগাইছে, দিওয়ানা বানাইছে...’, ‘বন্ধুরে কই পাব সখী গো’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু...’, ‘তুমি বিনে আকুল পরান...’-সহ তার কালজয়ী সব গানের সুর ছড়িয়ে পড়ে উজানধলের বসন্ত বাতাসে। উৎসবকে কেন্দ্র করে উজানধল মাঠে নানা পণ্যের পসরা নিয়ে জমে ওঠে বর্ণিল মেলা।
আবদুল করিমের নামে একটি একাডেমি করার আশা ব্যাক্ত করে শাহ আবদুল করিম পরিষদের সভাপতি ও বাউল সম্রাট পুত্র শাহ নুর জালাল বলেন, শাহ আবদুল করিমের বাড়িতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের বাইরে থেকে ভক্ত-সুধীজনেরা আসেন। তাই এখানে যদি শাহ আবদুল করিম এর নামে একটি একাডেমি তৈরি করা যায়, তাহলে তাঁর সৃষ্টি ও স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করি।
উৎসবে বিকাশের হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স হুমায়ুন কবির বলেন, একুশে পদক প্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম এর জন্মস্থান উজানধলে আয়োজিত এই লোক উৎসবের আয়োজনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে পেরে বিকাশ অত্যন্ত আনন্দিত। তার অনবদ্য সৃষ্টি সারা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এরকম সুস্থ সংস্কৃতির চর্চায় বিকাশ সব সময় পাশে থাকতে চায়।