বিচারপতির মেয়েকে খুঁজছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির মেয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা জিডির সূত্র ধরে পুলিশ তুহিন সুলতানা তপুকে (৫০) খুঁজছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির মেয়ে তুহিন সুলতানা তপুকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। পুলিশ ধারণা করছে, বৃহস্পতিবার রাতে তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামছুল হুদার জিডি দায়ের করার খবর পেয়ে তুহিন আত্মগোপন করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এই জিডি দায়ের করেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামছুল হুদা। জিডিতে আসামি করা হয়েছে তার মেয়ে তুহিন সুলতানা তপু ও ফেসবুক পেজ মজার টিভির প্রধান নির্বাহী মাহসান স্বপ্নকে।

জিডিতে উল্লেখ করা অভিযোগের তথ্য দিয়ে শাহবাগ থানার ওসি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বাসা সেগুনবাগিচায় গ্লোব নিবাস অ্যাপার্টমেন্টে। জিডিতে তিনি বলেছেন, ১৯৯০ সালে তার মেয়ে তুহিন সুলতানা তপুর পছন্দের এক ছেলের সঙ্গে তাকে বিয়ে দেন তিনি। বিয়ের ১০ বছর পর তার মেয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে অন্যত্র বিয়ে করে। এরপর থেকে মেয়ের সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। তুহিন সুলতানা তপু অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তৃতীয় সন্তান। কয়েক বছর আগে তার বাসায় এসে কয়েক দিন থাকেন তিনি। এরপর স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরি করে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তুহিন তার মায়ের মোবাইল ফোনসেটটি চুরি করে নিয়ে যায়। ঐ ফোন থেকে সমাজের বিভিন্ন মানুষের কাছে ফোন করে বিচারপতির মেয়ে পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করতেন তিনি। এছাড়া ধানমন্ডি, কলাবাগান ও জিগাতলা এলাকায় তার মেয়ে ভিক্ষুক বেশে বিচারপতি বাবার পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের মিথ্যা কথা বলতে থাকে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ মজার টিভি নামে একটি ফেসবুক পেজে প্রচার করে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।

এদিকে শাহবাগ থানার ওসি মামুনুর রশিদ বলেছেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির দায়ের করা জিডির তদন্ত করতে আদালতের অনুমতির জন্য আবেদন করা হবে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে জিডি দায়ের করার পরপরই আমরা অভিযুক্তদের আটক করার চেষ্টা চালাচ্ছি।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির ঐ মেয়ের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কয়েকটি মৌখিক অভিযোগ ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ থানায় দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। মৌখিক অভিযোগের সূত্র ধরে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঐ মহিলা ১৫-১৬ বছরের এক তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে ধানমন্ডি এলাকায় বিচারপতির মেয়ে পরিচয় দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করেন। মহিলা ঐ তরুণীকে নিজের সন্তানের পরিচয় দিয়ে থাকেন। মহিলা তার বাবার পরিচয় দিয়ে চিত্কার করে তার অসহায়ত্বের কথা জানায় পথচারীদের। দুই-এক জন পথচারী ঐ মহিলার কথা শুনে টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করেন। দুই-এক জন ব্যক্তি তার মোবাইল ফোন নম্বর ঐ মহিলাকে দিয়ে দেওয়ার পর বিপদে পড়ে যান। ঐ মহিলা পরবর্তী সময়ে ফোন করে তাদের বাসায় চলে যান। সেখানে তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এরপর বিচারপতি বাবার পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন। তখন তারা বিপদ বুঝে ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দেন।

পুলিশ জানায়, মহিলার এসব কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে তার বড় মেয়ে তাকে বাসায় নিয়ে যান। সেখানে ঐ মহিলা তার মেয়ের ফ্ল্যাটটি নিজের বলে দাবি করেন। তখন মেয়েই তার মাকে বাসা থেকে বের করে দেন। পুলিশ গিয়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করলে মহিলা তার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বাবার পরিচয় দিয়ে হুমকি দেয়। পুলিশ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সঙ্গে যোগাযোগ করে এর কোনো সমাধান পায়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029561519622803