দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় সারাদেশের মত নানা আয়োজনে ৫১তম মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হলেও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে দেখা গেছে ব্যতিক্রম চিত্র। সেখানে টাঙানো হয়নি জাতীয় পতাকা, অপরিস্কার-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে নেই কারো আনাগোনা। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান কমান্ড কাউন্সিলের নেতারা।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পাকেরহাটে অবস্থিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে নিরবতা। নব-নির্মিত এ বিল্ডিংয়ের সামনেই রয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। আর ভবনের সামনে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যানার টাঙানো। চারপাশে গাছের পাতা, ধুলো আর ময়লায় অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে আছে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) অধীনে প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের প্রতিটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনের সামনেই রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনীয় ম্যুরাল। ৩ তলা ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় করা হয়েছে মার্কেট। মূলত মার্কেটের ভাড়া দিয়ে ভবনের প্রাথমিক খরচ যোগানো হয়। ৩ তলায় রয়েছে অফিস কক্ষ, বিশাল আকৃতির একটি কনফারেন্স রুম। অফিস কক্ষে রয়েছে উন্নত আসবাবপত্রসহ আধুনিক বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। তবে, সারা বছর ভবনগুলো তালাবদ্ধ থাকে। মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে স্বল্প সময়ের জন্য ভবনগুলো খোলা হয়ে থাকে। সে সময় গুলোতে শুধু কমপ্লেক্স ভবনে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন করা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার সেটিও হয়নি। এছাড়া মাসের পর মাস অপরিচ্ছন্ন ময়লা আবর্জনায় থাকে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যাদের জন্য স্বাধীন ও সার্বভৌম এ রাষ্ট্র তাদের নামে তৈরি হওয়া কমপ্লেক্স ভবনে মহান বিজয় দিবসে পালনে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রয়োজন ছিলো। উপজেলা প্রশাসন বর্তমানে এটির দায়িত্বে রয়েছে। তাই প্রশাসনের নজরদারি দেয়া প্রয়োজন ছিলো।
দুঃখ প্রকাশ করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সমন্বয়হীনতার অভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটে গেছে। যা আমাদের জন্য বেদনাদায়ক।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার রাশিদা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আজকের মত দিনে পতাকা উত্তোলন করতে না পারা দুঃখজনক। আমি কমান্ডারের দায়িত্ব থাকলেও পতাকা উত্তোলন করা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাজ। আর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স রক্ষণাবেক্ষণে যেমন প্রশাসনের দায়িত্ব রয়েছে তেমনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদেরও দায়িত্ব রয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কমপ্লেক্স পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে।