বিদ্যালয়ে ঘুমাচ্ছেন দুই শিক্ষক, ক্লাসের অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি |

শিক্ষকের অপেক্ষায় শ্রেণিকক্ষে বসে আছে শিক্ষার্থীরা। আর স্কুলে এসেই ঘুমাচ্ছেন শিক্ষক। অন্যদিকে সময় পেরিয়ে গেলে পাঠগ্রহণ না করেই বাড়ি ফিরছে তারা। এমনই চিত্র দেখা গেছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিষমডাঙ্গা বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

এ ঘটনা শুধু একদিনের নয়, প্রায় প্রতিদিনই ঘটে এমনটা। বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষকের মধ্যে একজন শ্রেণিকক্ষে আরেকজন অফিসকক্ষেই ঘুমান। এভাবেই তারা কাটিয়ে দিচ্ছেন বিদ্যালয়ের পুরো সময়।

জানা যায়, ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে উপজেলার পূর্ব সীমান্তে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৯০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা ছয়জন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় এবং বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান হওয়ার নিয়ম। কিন্তু সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা গেলো শিক্ষার্থীরা কেউ খেলছে, কেউ শিক্ষকের অপেক্ষায় শ্রেণিকক্ষে বসে আছে। বেলা সাড়ে ১১টা, তখনও একই অবস্থা।

শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করলে সবাই সমস্বরে উত্তর দিলো, ‘নাম লিখবেন না, আমরা কেউ রক্ত দেবো না’। জানা গেলো, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঘন ঘন শিশুদের রক্ত পরীক্ষা করতে যায়। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই আতঙ্ক। কিন্তু এনজিওর নাম জানে না কেউই।

নাম প্রকাশ না শর্তে এক অভিভাবক বলেন, বেশির ভাগ দিনই ছেলেমেয়েরা স্কুলে এসে বসে থেকে বাড়ি চলে যায়।

আরেক অভিভাবক বলেন, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মেয়েকে নিয়ে বসে আছি, কোনো ক্লাস হয়নি। দেবেন্দ্রনাথ মাহাতো ও বিশ্বনাথ মাহাতো স্যার স্কুলে এসেই ঘুমান। বাকি স্যাররা ক্লাস নেবেন বলে স্কুলেই বসে থাকি।

সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রধানশিক্ষক নৃপেন্দ্রনাথ মাহতো এসে বলেন, ক্লাস ছিল না, তাই একটু বাইরে গিয়েছিলাম।

তাকে শ্রেণিকক্ষে সহকারী দুই শিক্ষকের ঘুমানোর বিষয়ে বললে তিনি বলেন, সবসময় তো ঘুমায় না, যখন ক্লাস না থাকে তখন একটু ঝিমিয়ে যায়। 

পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, দেবেন্দ্রনাথ ও বিশ্বনাথ স্যার বেশি ক্লাস নেন না। শ্রেণি ও অফিসকক্ষেই ঘুমান। অন্য স্যাররা ঠিকই ক্লাস নেন।

এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক দেবেন্দ্রনাথ ও বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, ক্লাস বাদ দিয়ে আমরা কখনো ঘুমাই না। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের লিখতে দিয়ে একটু চোখ বন্ধ করে থাকি। তাও এমনটা প্রতিদিন না মাঝেমধ্যে হয়।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, কোনো শিক্ষকের বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘুমানোর সুযোগ নেই। ওই বিদ্যালয়ে দুজন শিক্ষকের ঘুমানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040731430053711