যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) সব ক্লাস অনলাইনে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কৃচ্ছ্রসাধনের নির্দেশনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যয় সংকোচনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যবিপ্রবি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২ জুলাই ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের কতিপয় ব্যয় স্থগিত/হ্রাসকরণ ও বিদেশভ্রমণ সীমিতকরণ পরিপত্র জারি করে। পরিপত্র অনুযায়ী, বিদ্যুৎখাতে বরাদ্দ অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ নির্দেশনাকে সামনে রেখে গত রোববার (৯ জুলাই) যবিপ্রবি ১০ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সব বিভাগের ক্লাস শ্রেণিকক্ষের পরিবর্তে অনলাইনে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১০ জুলাই যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন তার নিজস্ব সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন।
যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের দাবি, ‘২০২৩-২৪ সালে বিদ্যুৎ খাতে আমরা তিন কোটি ২০ লাখ টাকা বাজেট পেয়েছি। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের ২৫ শতাংশ বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে হবে অর্থাৎ আমরা ৭৫ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারব। এরমধ্যে গতবছর বিদ্যুৎখাতে ৯১ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।
এছাড়া জ্বালানি খাতে, সরকার এবার বাজেট দিয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা। বিধি অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারব ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। কিন্তু আমাদের গত বছরের বকেয়া আছে ৩৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। সেই হিসাবে আমরা ৭৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যবহার করতে পারব। এসব কিছুর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ কমাতে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সব ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সপ্তাহে এক-দুদিন অনলাইনে ক্লাসের বিষয়টি ভাবনায় ছিল। কিন্তু তাতে শিক্ষার্থীরা হল বা ক্যাম্পাসেই থাকবে। ফলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে না। শিক্ষার্থীরা যাতে বাড়িতে গিয়ে অনলাইনে ক্লাস করে এ জন্যই এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বা জ্বালানির কারণে শ্রেণিকক্ষের সব ক্লাস স্থগিত করে দেওয়ায় কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না।
যবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কে এম দেলোয়ার হোসেন জানান, ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষ বিমুখ করা কোনো সমাধান না। এখন কিন্তু বিদ্যুতের সেই ঘাটতি নেই। ফলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সব ক্লাস কেন অনলাইনে নিতে হবে সেটি বোধগম্য নয়। এ সিদ্ধান্ত সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, কৃচ্ছ্র সাধনের পরিপত্র দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। সেখানে বিদ্যুতে ২৫
শতাংশ ও জ্বালানিতে ২০ শতাংশ ব্যয় সংকোচনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে অনলাইনে ক্লাসে যাওয়ার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ই সিদ্ধান্ত নেবে। সেক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ব্যয় সংকোচনে সপ্তাহে একদিন থিউরিক্যাল ক্লাস অনলাইনে হতে পারে। পরিপত্রে যদি বরাদ্দ শতভাগ বন্ধ রাখতো, তাহলে শ্রেণিকক্ষে সব ক্লাস স্থগিত করে অনলাইনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতো। কিন্তু পরিপত্রে সেটি বলেনি।শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।