বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদ্যুতে দীর্ঘদিন ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হতে হবে। 

আলেমদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা মসজিদে নামাজ পড়বেন,  তখন বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় বিদ্যুতের সুইচগুলো বন্ধ করে রাখবেন। ওটা শুধু মসজিদের ক্ষেত্রে না, আপনাদের বাড়িতেও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন, এতে আপনাদের বিলও কম হবে, বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে। 

সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি তার অর্ধেক দামে বিদ্যুৎ আমরা দিচ্ছি। বিরাট অংকের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, সেই ভর্তুকি দীর্ঘদিন দেওয়া সম্ভব না। সেই কথাগুলো সকলের মাথায় রাখতে হবে। কোনভাবে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস অপচয় না ঘটে। ইসলাম ধর্মে অপচয়ের ব্যাপারে না রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝে মাঝে আমাদের কোমলমতি ছেলেদের বিভ্রান্তি পথে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা যেন জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত না হয়। সেজন্য তাদের বুঝাতে হবে যে ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। মানুষ খুন করলে কখনও বেহেস্তে যাওয়া যায় না, খুন করলে দোজখেই যেতে হয়, এ বিষয়টা মানুষকে সচেতন করতে হবে। মসজিদের ইমাম, আলেম, খতিবদের সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখে, আপনাদের কথার গুরুত্ব রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মাদক, নারীর প্রতি সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, অহেতুক মিথ্যা কথা বলে গুজব ছড়ানো, গৃহকর্মীদের প্রতি অমানবিক আচরণ, দুর্নীতি ইত্যাদির বিষয়ে মসজিদের খুতবা দেওয়ার সময় যদি আপনারা বেশি করে বোঝান তাহলে কিন্তু মানুষ সেটা গ্রহণ করে। বিশেষ করে জুমার দিন যে খুতবা দেওয়া হয় তখন ভালোভাবে তুলে ধরা দরকার। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি উপজেলায় মসজিদ নির্মাণ করে করে ইসলাম ধর্ম প্রচার প্রচারে সুযোগ করে দেব। আজকে আমরা ৫০টি মসজিদ উদ্বোধনের জন্য সমবেত হয়েছি, রমজান মাসে উদ্বোধন করতে পেরেছি, এজন্য সকলকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে কিছু দোয়া করতে বলব, আমরা যেন আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি।

সরকারপ্রধান বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে ঘোষণাকে অনুমোদন দিয়েই ১৭ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গ্রহণ করা হয়। আজকে দিনে প্রথম সরকার গঠন করা হয়েছিল। যেহেতু বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের হাতে কারাগারে বন্দি ছিলেন, তাই উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম  অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পালন করেন। এই সরকারই মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। সকলের সহায়তায় ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। আজকের এই পবিত্র দিন এবং পবিত্র মাহে রমজানের মসজিদ উদ্বোধন করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ধর্মের প্রতি অত্যন্ত নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ইসলাম ধর্মের বাণী যেন আমার দেশের মানুষ সঠিকভাবে জানতে পারে সেই ব্যবস্থা তিনি করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম প্রচার প্রসার, ইসলামিক শিক্ষার মান আরও উন্নত হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। মাদরাসা শিক্ষাকে অনেকে অবহেলার চোখে দেখতো কিন্তু এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম মাদরাসা শিক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষা ব্যবস্থা শুরু হয়, কাজেই তাকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের জাতীয় শিক্ষা নীতিমালাতেও আমরা ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছি। এ ছাড়া মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমও আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম শুরু করে। 

তিনি আরও বলেন,সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কে বেহেস্তে যাবে, কে দোযখে যাবে তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সিদ্ধান্ত নিবেন। আল্লাহর ওপর সে ভরসা রেখে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করি। সকলের সমান অধিকার রয়েছে সেটাই আমরা বিশ্বাস করি। আমাদের পবিত্র ধর্মকে যেন অন্যভাবে কলুষিত করতে না পারে, সেদিকে আমাদের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নজর রাখতে হবে।
 
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দারিদ্র্য হার কমিয়ে নিয়ে এসেছি। এখানে কেউ দরিদ্র থাকবে না। আমরা একটা সততা নিয়ে কাজ করছি বলেই আল্লাহ সহায় পাচ্ছি। যে কারণে আজ দারিদ্র্য হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ যেন তার অধিকার পায় সেটা আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়েই কিন্তু জাতির পিতা এদেশ স্বাধীন করেছিলেন। আমরাও সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ শিক্ষা ক্যাডারে অধ্যাপক হচ্ছেন যারা - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে অধ্যাপক হচ্ছেন যারা ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের মসজিদ ইবাদাতের পাশাপাশি জ্ঞানচর্চারও একটি কেন্দ্র হতে পারে: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha মসজিদ ইবাদাতের পাশাপাশি জ্ঞানচর্চারও একটি কেন্দ্র হতে পারে: ঢাবি উপাচার্য ঢাকা বোর্ডের পরিদর্শক আবুল মনছুর ভূঁঞার ঘুষ বাণিজ্য - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডের পরিদর্শক আবুল মনছুর ভূঁঞার ঘুষ বাণিজ্য দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031509399414062