বিনামূল্যের বই দিতে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে ২০০ টাকা আদায়!

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি |

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সরকার থেকে দেয়া প্রাথমিকের বিনামূল্যের বই বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সিংগাইর পৌরসভার ৮৪নং পশ্চিম গোবিন্ধল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যের বই বিতরণে মাথাপিছু ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে শিক্ষকদের দাবি, বইয়ের জন্য নয়, ঝাড়-দারের বেতন দিতে টাকা নেয়া হচ্ছে। 

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে টাকা নেয়ার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলারত অবস্থায় ছিল একঝাঁক শিক্ষার্থী। তাদের প্রত্যেককেই বই নিতে ২০০ করে টাকা দিতে হয়েছে বলে জানায়।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মো. মিরাজ হোসেন বলে, ‘বই দেওয়ার সময় স্যাররা আমাদের কাছ থেকে ২০০ করে টাকা নিয়েছে। কী কারণে নিয়েছে তা আমরা জানি না।’

এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়টির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মো. সোলাইমানের বাবা মো. মুসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে বেড়াতে যাওয়ায় এখনো বই নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমার ভাতিজি সুমাইয়া স্কুল থেকে বই নিয়েছে। সে বই নিতে মাস্টারদের ২০০ টাকা দিয়েছে। তারা কী কারণে টাকা নিয়েছে তা জানি না।’ চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মো. ইয়াছিনের বাবা খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে এখনো বই নেয়নি। কিন্তু আমার ছেলেকে জানিয়েছে, বই নেওয়ার সময় স্কুলের ঝাড়ুদারের জন্য ২০০ টাকা দিতেই হবে।’ 

শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীনকে তার অফিসকক্ষে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তবে কর্তব্যরত শিক্ষক তানজিনা, লিমা আক্তার ও মাছুমা আক্তার বলেন বইয়ের জন্য নয়, ঝাড়ুদারের বেতন দিতে বিদ্যালয়ের ১৫০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। পরে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাওলানা নাজমুল হক বলেন, ‘বিষয়টি (বই দিতে টাকা আদায়) শুনে আমি শিক্ষকদের শাসিয়েছি। টাকাগুলো বইয়ের জন্য নয়, ঝাড়ুদারের বেতন দিতে নেওয়া হয়েছে।’ এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন না প্রকাশেরও অনুরোধ জানান তিনি।

এদিকে সিংগাইর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা নার্গিস আক্তার বলেছেন, বিনামূল্যের বই দিতে টাকা আদায় করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044910907745361