কুড়িগ্রামের রাজারহাটে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪৯৫টি বিন্যামূল্যের সরকারি বইসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজারহাট ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন : ৪৯৫ বিনামূল্যের বইসহ ফেরিওয়ালাকে আটকে পুলিশে দিলো জনতা
আটককৃতরা হলেন, ফেরিওয়ালা মোস্তাক আহমেদ (৪৭) ও অটোরিকশা চালক নয়ন (২৬)। বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক অফিসের নৈশপ্রহরী মঞ্জুরুল ইসলাম বিক্রি করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এ ঘটনায় রাতেই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বাদী হয়ে ওই ফেরিওয়ালা ও শিক্ষা অফিসের নৈশপ্রহরীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ওই মামলায় ফেরিওয়ালা মোস্তাক আহমেদকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আর অটোরিকশা চালক নয়নকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে উপজেলা মাধ্যমিক অফিসের নৈশপ্রহরী মঞ্জুরুল ইসলামকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। এদিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজারহাট থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান।
জানা গেছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে বিতরণের জন্য অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা, ইসলাম ধর্ম ও চারুকলা বিষয়ে সরকারি ৪৯৫টি বই কেনেন ফেরিওয়ালা মোস্তাক। তিনি উপজেলার মেকুরটারী গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে। ক্রয়কৃত বইগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় রাজারহাট ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার সামনে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা।
এদিকে ঈদের ছুটিতে সরকারি বই কালোবাজারে বিক্রি করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি চক্র। বুধবার রাতে রাজারহাট উপজেলার সিরাজুদ্দিন দাখিল মাদরাসা থেকে দুই বস্তা বই বিক্রির উদ্দেশে বের করা হয়। পরে স্থানীয়রা বইগুলো আটক করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করেন।
ফেরিওয়ালা মোস্তাক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমি অশিক্ষিত মানুষ, লেখাপড়া জানি না। এগুলো কোন বছরের বই এটা বুঝতে পারিনি। শিক্ষা অফিসের নৈশ প্রহরী মন্জুরুল বইগুলো আমার কাছে বিক্রি করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রব দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রাজারহাট ফাজিল মাদরাসায় সংরক্ষিত কক্ষ থেকে আমাদের অফিসের নৈশপ্রহরী মঞ্জুরুল ইসলাম বইগুলো বিক্রি করেছেন বলে শুনেছি। রাতে বাদি হয়ে ফেরিওয়ালা মোস্তাক ও নৈশপ্রহরী মন্জুরুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। এছাড়া সিরাজুদ্দিন দাখিল মাদরাসার বইগুলো ভিজে যাওয়ার কারণে বের করা হয়েছিলো বলে জানানো হয়েছে। খবর পেয়ে সেগুলো মাদরাসায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ফেরিওয়ালা মোস্তাককে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আরেক আসামি নৈশপ্রহরী মন্জুরুল ইসলামকে গ্রেফতাররের চেষ্টা চলছে। তবে বুধবার রাতে অটোরিকশাচালক নয়নের মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।