নীলফামারীর জলঢাকার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষক নেতা ও শিক্ষা অফিসেরর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার শেখাতে সরকারের পক্ষ থেকে উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দেয়া ল্যাপটপ বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। গাড়ি ভাড়ার খরচের নামে স্কুলপ্রতি ১০০ টাকা করে ১৬ হাজারের বেশি টাকা আদায় করেছেন তারা। শিক্ষকরা বলছেন, গাড়ি ভাড়ার জন্য ২ হাজার টাকা খরচ হলেও তোলা হয়েছে ১৬ হাজার ২০০ টাকা।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শেখাতে এবং প্রতিদিন ল্যাপটপের মাধ্যমে শ্রেণি কক্ষে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে ক্লাস নেয়ার জন্য প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাঝে বিনামূল্যে ল্যাপটপ বিতরণ শুরু করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে জলঢাকা উপজেলায় প্রথম ধাপে ১৭৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম অর্ন্তভুক্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার ১৬২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ বিতরণ করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
অভিযোগ রয়েছে, ল্যাপটপ বিতরণের আগে রেজিস্ট্রার খাতায় স্বাক্ষর নেয়ার সময় ‘গাড়ি ভাড়া’ খরচের জন্য ল্যাপটপ পাওয়া প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করেন কয়েকজন শিক্ষক নেতা।
সূত্র জানায়, নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জলঢাকা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ১৭৮টি ল্যাপটপ গাড়িতে করে আনা হয়। জেলা শিক্ষা অফিস থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসের ২৩ কিলোমিটার। এ দুরত্বের জন্য গাড়ি ভাড়া দেড় হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা। সেখানে ১৬২ টি ল্যাপটপ বিতরণে আদায় করা হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। বাকি টাকা ভাগাভাগি হয় শিক্ষক নেতা ও অফিসের কয়েকজন কর্মচারীর মধ্যে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ল্যাপটপ পাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক প্রধান শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন,দুই হাজার টাকার এ খরচটুকু অফিস বহন করতে পারতো,সরকারি ল্যাপটপ নিতেও আমাদের পকেট থেকে খরচের টাকা দেয়ার লাগলো। আর ভাড়া প্রয়োজন দুই হাজার টাকা কিন্তু আদায় করা হলো ১৬ হাজার টাকা।
ল্যাপটপ বিতরণ কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মান্নান প্রথমে টাকার নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, টাকা নিয়ে থাকলে গাড়ি ভাড়ার জন্যই নেয়া হয়েছে। আমাদের অফিস সহকারী মতিউরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ল্যাপটপ বিতরণে টাকা নিলে তা গাড়ি ভাড়ার জন্যই নেয়া হয়েছে। তবে এতো বেশি টাকা আদায় করা ঠিক হয়নি।