সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একটি ব্যাচের ৪০ জন শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ভয়াবহ সেশনজট থেকে উত্তরণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সরাসরি উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দেওয়া ও ফেসবুকে সংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গ টেনে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও শিক্ষকদের উদাসীনতা নিয়ে লেখাই তার কারণ। ঘটনাটি বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া কিংবা মুক্ত মত প্রকাশের প্রচেষ্টাকে রুদ্ধ করার একটি খণ্ডচিত্র। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে রয়েছে জ্ঞানচর্চার উন্মুক্ত অবকাশ ও স্বাধীন চিন্তা বিকাশের অফুরন্ত সুযোগ। রয়েছেন অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী, যাঁদের পাঠদান ও আন্তরিকতায় সমৃদ্ধ হবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। শুক্রবার (১ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আরও জানা যায়, পাশাপাশি বিকশিত হবে মনন ও মননশীলতা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কি আসলেই তাই হচ্ছে? নানান অসংগতি, আধিপত্য বিস্তার ও ভয়ের নীতি কায়েম করে ক্লাসরুমগুলো সংকুচিত করার মাধ্যমে ক্রমেই শিক্ষার পরিবেশ ও সুযোগ সীমিত হচ্ছে। অসংগতি কিংবা উদাসীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে রুদ্ধ করা হয় শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের অধিকার। স্বাধীন চিন্তা বিকাশের প্রচেষ্টাকে দমিয়ে দেওয়ার অপকৌশল হিসেবে কখনো সিজিপিএ-এর ভয়, কখনো শোকজ—যা কি না উচ্চশিক্ষার প্রকৃত অর্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পরিশেষে, দেশ ও জাতির স্বার্থে আগামীর তারুণ্যের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য উচ্চশিক্ষার মানসম্মত সুযোগ নিশ্চিত করতে সরকার, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আন্তরিক ভূমিকার বিকল্প নেই।
লেখক : তানভীর আহমেদ রাসেল, শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়