তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা রাখার সময় বার বার বাধার মুখোমুখি পড়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।প্রথমবার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের কাছ থেকে প্রতিবাদের মুখে পড়েন পেজেশকিয়ান। প্রতিবাদের মুখে পড়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রতিবাদ হতে থাকলে তিনি আর বক্তব্য রাখবেন না।
ইরানে নারী অধিকার বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হলে তাদের বহিষ্কারাদেশ বাতিল করবেন বলে নির্বাচনি ক্যাম্পগুলোতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পেজেশকিয়ান।
শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় এ বিষয়টি এড়িয়ে গেলে বার বার বাধার মুখে পড়েন তিনি।
রোববার (১৩ অক্টোবর) ইরানভিত্তিক নিউজপোর্টাল ইরান ইন্টারন্যাশনাল এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
কিছুক্ষণ বক্তব্য রাখার পর এক ছাত্র পেজেশকিয়ানের বক্তব্য প্রদানে বাধা প্রদান করেন এবং বলতে থাকেন, কেন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃতদের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন! এ সময় প্রেসিডেন্ট তাকে থামতে বলেন এবং বলেন, এ ভাবে চলতে থাকলে তিনি আর বক্তব্য রাখবেন না।
এর পর বক্তব্য রাখা শুরু করার পর আরেক শিক্ষার্থী তাকে বাধা দিলে পেজেশকিয়ান মঞ্চ থেকে নেমে এসে শিক্ষার্থীকে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে বলেন।
এসময় কট্টর ডানপন্থী শিক্ষার্থীটি আগামী ৭ ডিসেম্বর তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার পেজেশকিয়ানকে আমন্ত্রণ জানান।
এরপর পেজেশকিয়ান মঞ্চে উঠে তার বক্তব্য রাখতে শুরু করলে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফরা তাকে বাধা দেন। এতে করে সরকারি লোকজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় পেজেশকিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের সমালোচনা করে বলেন, আপনারা নিয়ম ভঙ্গ করতে পারেন না। আমরা এখনো নিয়ম মেনে চলার বিষয়টি বুঝে উঠতে সক্ষম হইনি।
এরপর তিনি বলেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফদের বলার কিছু থাকে, তাহলে তারা একটি সভা করুক। তারপর আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।
প্রসঙ্গত, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে নারীদের জীবনযাপন, কথা বলার অধিকাররের দাবিতে ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চরম অসন্তোষ শুরু হয়। এমনকী ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে সরব হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি, এসব প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের সরকার বহিষ্কার করা শুরু করলে পেজেশকিয়ান এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিলেন।
কিন্তু শনিবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখার সময় এ বিষয়ে তিনি নীরব থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বেশ গুরুত্বের দাবি রাখে।