অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, অনেক চিন্তাভাবনা করেই এবারের বাজেট দিয়েছি। অনেকে বলছেন, বিশ্বব্যাংকের কথা শুনে বাজেট দিয়েছি। বিশ্বব্যাংক আমাদের টাকা দিচ্ছে। তাই তাদের কথা শুনতে হবে। কারণ টাকা তো লাগবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি: প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও পুষ্টি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদের বাজেট পেশ করার পর নানা মহল থেকে নানা প্রতিক্রিয়া আসছে। সব প্রতিক্রিয়া আমলে নিচ্ছি। বাস্তবসম্মত এবং বাজেটে বাস্তবায়নযোগ্য প্রতিক্রিয়াগুলো অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করা হবে। কারণ এখনো বাজেট পাস হয়নি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বাজেটের সমালোচনা করছেন। আমাদের অর্থনীতি, বাজেট নিয়ে বিশ্বব্যাংক কী বলছে সেদিকে তাদের নজর দিতে বলব। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো করছে। আমার টাকা লাগবে, বিশ্বব্যাংকের কথা শুনতে হবে। না হলে আপনারা (সমালোচকরা) টাকা দিন।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার জনবান্ধব। অনেকেই বলেন, সরকার শিগগিরই পড়ে যাবে। কই সরকার তো পড়ে না। সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে, দেউলিয়া মানে কী? দেউলিয়া তো হলো না। বিশ্বব্যাংক কিছু বোঝে না, আপনি সব কিছু বোঝেন? বাজেট দিলাম, এটা বোঝার চেষ্টা করেন। এই বাজেট জনবান্ধব। কোনো কিছুতে সমস্যা থাকলে পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা আছে।
এ সময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ৪৮ বিলিয়ন ডলার তো হাওয়ায় মিলিয়ে যায়নি। উচ্চমূল্যে সার ও জ্বালানি তেল আমদানিতেই ১৪ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে। রিজার্ভ নিয়ে প্রতিদিন প্রশ্ন করা হয়। এখনো তিন মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ আছে। সেটা৫ মাস হলে ভালো হতো। তবে, অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে, রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। সামনে আরও ভালো সময় আসছে। তিনি বলেন, বছরজুড়ে সব ধরনের পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। এ জন্য যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমার থেকে স্বল্পমূল্যে আদা-মরিচ আমদানির চেষ্টা করছি। রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গেও চুক্তি করেছি। পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতে ডলারের দাম বাড়লেও তেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখা হয়েছে। বছরজুড়ে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে চাই। আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছি। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি সুবিধা দিচ্ছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন খরচ কমানোর উপায় নিয়ে গবেষকদের ভাবতে হবে। এ ছাড়া, পচনশীল পণ্য নিয়েওকাজ করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি ড. জিয়াকুন শি, সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।