বিশ্ব জুড়ে ক্রমবর্ধমান সামাজিক বৈষম্যের উদ্বেগজনক বৃদ্ধির মধ্যেই চলতি বছর বিশ্বব্যাপী বেকারত্বের হার বাড়ার খবর দিয়েছে জাতিসংঘের শ্রমবিষয়ক সংস্থা আন্তর্জাতিক লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)। বিশেষ করে বিশ্ব জুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈষম্য বৃদ্ধি ও স্থবির উৎপাদনশীলতা মানুষের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। গত বুধবার জাতিসংঘের শ্রম সংস্থা বিশ্ব কর্মসংস্থান এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ওই সতর্কবার্তা উঠে আসে।
আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বব্যাপী বেকারত্বের হার ছিল ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। গত বছর তা কিছুটা কমে ৫ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে অতিরিক্ত ২০ লাখ মানুষ চাকরিপ্রত্যাশীর তালিকায় যোগ হতে যাচ্ছে। এতে বৈশ্বিক বেকারত্বের হার বেড়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় সামান্য বেশি হলেও শ্রমবাজারগুলো আশ্চর্যজনক দৃঢ়তা দেখিয়েছে। তারপরও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পারায় বেশিরভাগ দেশে প্রকৃতপক্ষে মজুরি কমেছে। মূল্যস্ফীতির ফলে সাধারণত জীবনযাত্রার মানের যে ক্ষতি হয়, তা শিগগির পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের তুলনায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী শ্রমিকের সংখ্যা (প্রতিদিন ইউএস ২.১৬ ডলারের কম আয়) প্রায় ১০ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে। উচ্চ ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে বৈষম্য বেড়েছে। গত বছর উন্নত দেশগুলোতে চাকরি খোঁজার হার ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। আর দরিদ্র দেশগুলোতে এ হার ছিল ২০.৫ শতাংশ।
আইএলওর মহাপরিচালক গিলবার্ড হুনবো বলেন, ‘জীবনযাত্রার নিম্নমান এবং দুর্বল উৎপাদনশীলতা যৌথভাবে ধারাবাহিক মূল্যস্ফীতি তৈরি করেছে, যা বৃহত্তর অসমতা সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিক সুবিচার অর্জনের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করেছে।’