দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক : সারাবিশ্বে পেশাগত কাজের জন্য গত বছরের ১১ মাসে ৩২০ জন সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। গত তিন দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ইসরায়েল প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কারাগার হয়ে উঠেছে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে বন্দি করেছে দেশটি।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) শুক্রবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংগঠনটির বার্ষিক ‘জেল শুমারি’ অনুসারে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে সাংবাদিক গ্রেফেতারের তথ্য নথিভুক্ত শুরু করার পর থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল। গার্ডিয়ান পত্রিকার হিসেবে বর্তমানে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি আছেন ১৯ ফিলস্তিনি সাংবাদিক। এ হিসেবে প্রথমবারের মতো দেশটি তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৮০ জনেরও বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তবে গাজা কর্তৃপক্ষের হিসেবে, এ সংখ্যা শতাধিক।
সিপিজের রেকর্ড অনুসারে, সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক বন্দি ছিলেন ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে, সংখ্যা ৩৬০ এর বেশি। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে সাংবাদিকদের জন্য শীর্ষ তিন কারাগার হয়ে ওঠা দেশ হলো- চীন (৪৪ জন), মিয়ানমার (৪৩) এবং বেলারুশ (২৮)। এরপরেই ছিল রাশিয়া (২২) এবং ভিয়েতনাম (১৯)। তালিকায় ইসরায়েলের পরই আছে তার ঘোর শত্রু ইরান (১৭)।
সিপিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জোডি গিন্সবার্গ বলেন, ‘আমাদের গবেষণা দেখায় বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ববাদ কতটা বিস্তৃত। সরকারগুলো সমালোচনামূলক প্রতিবেদন বন্ধ করতে এবং জনসাধারণের জবাবদিহিতা রোধ করতে বদ্ধপরিকর।’
সিপিজে বলছে, এটি এমন একটি বিশ্ব যেখানে সাংবাদিকরা নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক নেতাদের নিন্দার মুখোমুখি হন। তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ সাংবাদিককে তাদের সমালোচনামূলক কভারেজের কারণে প্রতিশোধ হিসেবে ‘মিথ্যা সংবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের মতো রাষ্ট্রবিরোধী’ অভিযোগের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। বিশ্বের ৬০ জনেরও বেশি সাংবাদিককে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
গিন্সবার্গ বলছেন, ‘বিশ্বজুড়ে আমরা একটি সংকটময় মুহূর্তে পৌঁছেছি। সাংবাদিকরা যাতে স্বাধীনভাবে রিপোর্ট করতে পারে আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে। নয়তো আইনের বেড়াজালে সাংবাদিকদের এভাবেই কণ্ঠরোধ করা হবে। বিশ্বব্যাপী এই নির্বাচনের বছরে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করলে তা গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর।’
সিপিজে বলেছে, ভারতের ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলের নির্বাচন সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে বড় পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারে।