বিসিএস পরীক্ষার ২৩ লাখ খাতা নিয়ে ঝামেলায় পিএসসি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিসিএস পরীক্ষায় ২৩ লাখ খাতা নিয়ে ঝামেলায় পড়েছে  পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) । সাংবিধানিক সংস্থাটি এসব খাতা না পারছে নষ্ট করতে, না পারছে সংরক্ষণ করতে। ফলে বাধ্য হয়ে সদর দপ্তরের গুদামে, করিডরে বা হলরুমে খাতা সংরক্ষণ করছে। এতে কমিশনের রুটিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

নিয়ম অনুযায়ী অস্থায়ী এসব নথি ছয় বছরের বেশি সংরক্ষণ করার কথা না। কিন্তু পিএসসি গত ২৩ বছর ধরে এসব খাতা সংরক্ষণ করছে।

বিভিন্ন সময় পিএসসি এসব খাতা নিয়মানুযায়ী নষ্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু নতুন নতুন মামলায় ফলাফল তলব করা হয়। ফলাফলের অন্যতম প্রমাণ হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের খাতা।

কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, আদালত থেকে নির্দিষ্ট সময়ের পরে এসব খাতা চাওয়ার কথা নয়। কিন্তু চেয়ে বসলে তখন কী হবে, এ ভয়ে পিএসসির কোনো কর্মকর্তা দায়িত্ব নিয়ে এসব খাতা নষ্ট করছেন না। একাধিকবার এ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কোনো কমিটিই এ বিষয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। বর্তমানেও এ সংক্রান্ত একটি কমিটি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পিএসির ওই কর্মকর্তা।

এরমধ্যে ১২ লাখ খাতা হচ্ছে ২৩তম বিসিএস থেকে ৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত। এর সাথে যোগ হয়েছে নন ক্যাডারের ৫ লাখ খাতা। আরও বিভিন্ন দপ্তরের পরীক্ষার ৬ লাখ খাতা রয়েছে পিএসসির গুদামে। সব মিলিয়ে খাতার সংখ্যা ২৩ লাখ বলে জানিয়েছেন এসব খাতার ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বিসিএস প্রিলিমিনারি হয় এমসিকিউ পদ্ধতিতে। ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয় ৮টি বিষয়ে। সে হিসেবে প্রতিজন প্রার্থীর ৮টি করে খাতা।

লিখিত পরীক্ষার নম্বরের সাথে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর যোগ করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে পিএসসি। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই নিয়োগ দেয় জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়। জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক বিবেচনায় কিছু প্রার্থীকে নিয়োগ বঞ্চিত করে বলে অভিযোগ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত এসব প্রার্থীরা আদালতে যান। এখান থেকে কিছু মামলা হয়। আবার পরীক্ষার নম্বর চ্যালেঞ্জ করেও কিছু মামলা হয়। অনেক মামলা বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে।

২০০০ খ্রিষ্টাব্দে পিএসসির নেওয়া ২৩তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষায় স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রার্থী ছিলেন সুমনা সরকার। প্রিলিমিনারি এবং লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অংশ নেন মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায়। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তবে তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে জটিলতার অভিযোগে চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা থেকে বাদ পড়েন তিনি। তারপর আইনি লড়াইয়ের ইতিহাসটা বেশ দীর্ঘ। হাইকোর্ট, আপিল বিভাগ হয়ে তিনি চাকরিতে যোগ দেন ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ।

বর্তমানে পিএসসি ১ হাজার ৪০০ মামলায় লড়ছে। এর মধ্যে সক্রিয় মামলার সংখ্যা ৯০০। আরও ৫০০ মামলা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এসব মামলার ভয়ে খাতা নষ্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় না পিএসসি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023219585418701