বিসিএস শিক্ষানবিশদের জন্য অভিন্ন সিলেবাস প্রণয়নের উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিসিএস ২৬ ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ীকরণে বিভাগীয় পরীক্ষার জন্য অভিন্ন সিলেবাস ও বিধিমালা প্রণয়ন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রত্যেক কর্মকর্তাকে সহজে সমভাবে মূল্যায়নের জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন ক্যাডার পদে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ী করার জন্য সরকার নির্ধারিত বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এ জন্য প্রতিবছর জুন ও ডিসেম্বরে দুইবার ২৬টি ক্যাডার পদের কর্মকর্তাদের বিভাগীয় পরীক্ষা নেওয়া হয়। সরকারের শ্রম, অর্থ ও সময়ের অপচয় কমাতে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) এই পরীক্ষা অভিন্ন সিলেবাসে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছিল।

বিভাগীয় পরীক্ষার বিদ্যমান বিধিমালায় বিসিএস (পুলিশ) ও বিসিএস (প্রাণিসম্পদ) ক্যাডার ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারে তিনটি পত্রের ও পুলিশ ক্যাডারে চারটি পত্রের পরীক্ষা নেওয়া হয়। প্রাণিসম্পদ ক্যাডারে শুধু একটি পত্রের (দ্বিতীয় পত্র :হিসাব) পরীক্ষা নেওয়া হয়। সব ক্যাডারের জন্য প্রথম (আইন, বিধি ও পদ্ধতি) ও দ্বিতীয় (হিসাব) পত্রের বিষয় একই হলেও বিভিন্ন ক্যাডারের অভিন্ন সিলেবাস না থাকায় প্রতিটি ক্যাডারের পরীক্ষা পৃথকভাবে নিতে হয়। এর ফলে সরকারের শ্রম, অর্থ ও সময়ের অপচয় হচ্ছে। অবশেষে করোনাকালীন সংকটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে পিএসসির অভিন্ন সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ আমলে নিতে চলেছে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, বিসিএস ২৬ ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ী করতে বিভাগীয় পরীক্ষার সিলেবাস যুগোপযোগী করা হচ্ছে। দীর্ঘদিনের পুরোনো সিলেবাস ও বিধিমালা সংশোধন করে সচিব কমিটির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর পিএসসি, আইন মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেলে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি অনুবিভাগ) মো. লাইসুর রহমান বলেন, বিদ্যমান বিধিমালায় দুর্যোগকালে বিভাগীয় পরীক্ষা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। ফলে করোনাকালীন দুর্যোগে বিভাগীয় পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল পিএসসি। জনপ্রশাসন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র হবে পিএসসির মাধ্যমে :বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী দ্বিতীয় (হিসাব) পত্রের প্রশ্নপত্র মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক অথবা তার মনোনীত উপ-মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তা প্রণয়ন করে থাকেন। কিন্তু সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র যে কোনো হিসাব বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে তৈরি করবে পিএসসি। একইভাবে প্রথমপত্রের প্রশ্নপত্র পিএসসি-সংশ্নিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ কর্মকর্তার মাধ্যমে তৈরি করবে। তৃতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের মনোনীত কর্মকর্তা। এছাড়া করোনার মতো কোনো দুর্যোগ এলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত পিএসসি নিজেই নিতে পারবে।

পিএসসির একাধিক সদস্য বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের জীবনে বিভাগীয় পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে না পারলে চাকরি স্থায়ী না হওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। তাই এ পরীক্ষা পদ্ধতি সহজ করার জন্য পিএসসি দীর্ঘদিন ধরে পরামর্শ দিয়ে আসছিল। রাষ্ট্রপতির হাতে দেওয়া বার্ষিক প্রতিবেদনেও বিষয়টি বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। অবশেষে বিদ্যমান বিধিমালা সংশোধন করে পরীক্ষা পদ্ধতি সহজ করার কাজ শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

বিভাগীয় পরীক্ষা তিনটি পত্রের মাধ্যমে নেওয়া হয়। প্রতিটি পত্রের পূর্ণমান ১০০ নম্বর এবং পরীক্ষার নির্ধারিত সময় তিন ঘণ্টা। প্রতিটি পত্রের পাস নম্বর ৬০। তবে বিদ্যমান বিধিমালায় পাস নম্বরের ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে। কোনো কর্মকর্তা সব বা কোনো নির্দিষ্ট পত্রে একবারে কৃতকার্য হতে না পারলে তার শিক্ষানবিশকালে অকৃতকার্য পত্রটিতে এক বা একাধিকবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন। কমিশন কৃতকার্য শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের বিভাগীয় পরীক্ষার ফলাফল বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশ করবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003410816192627