বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান দুই সন্তানের জননীর

শরীয়তপুর প্রতিনিধি |

পরকীয়ার জের ধরে এবার বিয়ের দাবিতে স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন দুই সন্তানের জননী এক প্রবাসীর স্ত্রী। ঘটনাটি রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শরীয়তপুরের ডামুড্যার চরপাতালিয়া গ্রামে ঘটে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে বিয়ে না করায় স্কুলশিক্ষক আক্তার হোসেনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই নারী। 

এলাকাবাসীরা গণমাধ্যমকে জানান, বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আক্তার হোসেনের সঙ্গে  প্রায় আট মাস ধরে ওই নারীর পরকীয়া

প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত রমজানে যখন সবাই তারাবির নামাজ পড়তেন, তখন আক্তার হোসেনের ঘরে বসে তারা গল্প করতেন। কয়েকদিন আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু আক্তার হোসেন না আসার কারণে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। গত রমজানে তাকে সাবধান করা হয় যেন ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখে। কিন্তু সে আমাদের কথা শোনেনি। 

আক্তার হোসেনের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া ওই নারী বলেন, আক্তার হোসেন সম্পর্কে আমার দেবর হয়। এই সম্পর্ক ধরে সে আমার বাবার বাড়িতেও গিয়েছিল। আমার স্বামী প্রবাসী। গত জানুয়ারি মাসে স্বামী বিদেশে চলে যাওয়ার পর আক্তার হোসেন আমার স্বামীকে পরামর্শ দেয় আমার ছেলেকে তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে। তার কথা মতো ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করা হয়। স্কুল থেকে সে আমার সাথে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করে। প্রথমে আমি রাজি না হলেও সে জোড়াজুড়ি করলে একপর্যায়ে রাজি হই।

এরপর বাড়ির জন্য নতুন টিভি কেনে আক্তার হোসেন। আমাকে টিভিটা দেখতে যেতে বলে। আমি আক্তারের বাড়িতে গেলে সে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে ভিডিও ধারণ করে রাখে। ওই ভিডিও দেখিয়ে জোর করে আমাকে তার বাড়িতে নিয়মিত আসতে বলতো। বাড়িতে আসলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতো। এরপর আমার ছেলেমেয়েকে পড়ানোর নাম করে আমার বাড়িতে এসেও শারীরিক সম্পর্ক করত।

তিনি আরও বলেন, বিয়ে করবে বলে কিছুদিন আগে আমাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিল আক্তার হোসেন। সেখানে আক্তার আমাকে তার ভাই জব্বার হোসেনের বাড়িতে রেখে চলে আসে। পরে জব্বার হোসেন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনা আমার স্বামীর বাড়ির লোকজন জেনে গেছে। স্বামী আমাকে ফোন করে বলেছে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি এখন স্বামীর বাড়ি, বাবার বাড়ি কোথাও যেতে পারি না। তাই আক্তার হোসেনের বাড়িতে এসেছি বিয়ের দাবিতে। হয় আমি আক্তারকে বিয়ে করব, নয়ত আক্তারের বাড়িতেই মরব। এই বাড়ি ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই আমার।

বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সে তিন দিনের ছুটি নিয়ে স্কুলে আসেনি। শিক্ষা অফিস থেকে শুনতে পেলাম আক্তার হোসেন ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছে। যে ঘটনার কথা লোক মারফত জানতে পেরেছি, এমন কিছু ঘটে থাকলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়। একজন শিক্ষক এই কাজ করতে পারেন না।

ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা রতন বলেন, আক্তার হোসেন ও ওই নারীর বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছিলাম। মেয়ে ছেলেকে বিয়ে করবে কিন্তু ছেলে বিয়েতে রাজি না হওয়াতে আমরা সমাধান করতে পারিনি। এখন ওই নারী আক্তার হোসেনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের - dainik shiksha হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস - dainik shiksha নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর - dainik shiksha অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030009746551514