শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের জন্মদিন আজ। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাত বীরকে সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, তিনি তাদের অন্যতম।
মতিউর রহমান ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পুরান ঢাকার ১০৯ নম্বর আগা সাদেক রোডের মোবারক লজে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার রামনগর গ্রামে, যা এখন মতিনগর নামে পরিচিত।
মতিউর রহমান ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পাস করার পর সারগোদায় পাকিস্তান বিমানবাহিনী পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতিও লাভ করেন। ইরানের রানি ফারাহ দিবার সম্মানে পেশোয়ারে অনুষ্ঠিত বিমান মহড়ায় তিনি ছিলেন একমাত্র বাঙালি পাইলট।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একজন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হয়েও অসীম ঝুঁকি ও সাহসিকতার সঙ্গে ভৈরবে একটি ট্রেনিং ক্যাম্প খোলেন মতিউর রহমান। সেখানে যুদ্ধ করতে আসা বাঙালি যুবকদের প্রশিক্ষণ দিতেন তিনি।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ মে করাচিতে কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে মতিউর রহমান একটি জঙ্গি বিমান দখল করে মুক্তিযুদ্ধের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি একটি টি-৩৩ বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে কো-পাইলট রাশেদ মিনহাজের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হন। বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং মতিউর রহমানের সঙ্গে প্যারাস্যুট না থাকায় তিনি নিহত হন।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ আগস্ট মতিউর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। ৩৫ বছর পর ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জুন মতিউরের দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে দেশে এনে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনঃসমাহিত করা হয়।