বুটেক্স শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে ভিসি চান

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা চাইছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে বাইরের কাউকে দায়িত্ব দেয়া হোক।

এ বিষয়ে বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক গ্রুপে একটি ভোটের আয়োজন করা হয়। সেখানে গ্রুপের এক হাজার ১৬২ জন সদস্য ভোট দেন। সেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ মনে করেন উপাচার্য হিসেবে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে নিয়োগ  দেয়া হোক।

শিক্ষার্থীর বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা উপাচার্য হয়ে কী করতে পারেন শিক্ষার্থীরা সেটা সাবেক চার উপাচার্যের মাধ্যমে দেখেছেন। তারা বুটেক্সকে প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয়রুপে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আবার, বুটেক্সের কোনো অধ্যাপক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ হলে সদ্য পদত্যাগ করা উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা শোষণের স্বীকার হতে পারেন। তার বিরোধীরা অতিরিক্ত সুবিধা ভোগের আশঙ্কা থাকে। আর বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে নিউট্রাল পরিবেশ পাওয়া সম্ভব। 

ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ঈমাম রেজা আলী মুজাহিদ বলেন, স্টেক হোল্ডার হিসেবে চিন্তা করলে উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মতামত বা চাওয়াকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া জরুরি। নানা অনঅফিশিয়াল জরিপ দেখা যায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এক্সটার্নাল ভিসি চায়। এর পেছনে অন্যতম কারণ বুটেক্সের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং কেউ যাতে কোনোভাবেই বৈষম্যের শিকার না হয় এবং নতুন কোনো পরিস্থিতির যাতে সৃষ্টি না হয়। শিক্ষার্থীদের এই এক্সটার্নাল ভিসি চাওয়ার যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমিও একমত। যদিও ভিসি নিয়োগের এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের এবং মন্ত্রণালয়ের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে আমরা চাইবো শিক্ষার্থীদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে দেখা হোক এবং অতি সত্ত্বর এমন কাউকে দায়িত্ব দেয়া হোক যিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবী পূরণ করে ক্যাম্পাসে শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ হতে জানা গেছে, উপাচার্য হতে বস্ত্র বিজ্ঞান, বস্ত্র প্রকৌশল, বস্ত্র প্রযুক্তি বা বস্ত্র ব্যবস্থাপনা শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত অধ্যাপক হতে হবে।

বুটেক্সের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আবেদন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে যোগ্য প্রশাসক ও শিক্ষার্থী বান্ধব উপাচার্যের দাবি করেছেন। দেশের প্রকৌশল শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যেহেতু বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) আদর্শ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা হয় তাই বুয়েটের কোনো অধ্যাপক যিনি টেক্সটাইল গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত তাকে উপাচার্য হিসেবে চান।

বুটেক্সে এখন গ্রেড-১ এবং গ্রেড-২ অধ্যাপক আছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে কেউ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ হোক এমনটা চান অধিকাংশ শিক্ষক। পাশাপাশি একাংশ শিক্ষার্থী চান না বুটেক্সের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় হতে কেউ উপাচার্য হোক।

আইন নিয়ে ধোঁয়াশা

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যে আইন আছে তার ব্যাখ্যা ভিন্নরূপে প্রচার হচ্ছে। যেহেতু আইনে বলা আছে উপাচার্য হতে হলে বস্ত্র বিজ্ঞান, বস্ত্র প্রকৌশল, বস্ত্র প্রযুক্তি বা বস্ত্র ব্যবস্থাপনা শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত অধ্যাপক হতে হবে। সে হিসেবে বুটেক্সের অনেক শিক্ষক মনে করছেন, দেশে অনেক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আছেন যারা টেক্সটাইল নিয়ে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা না করলেও অনেকে টেক্সটাইল নিয়ে গবেষণা করছেন এবং টেক্সটাইলের বিভিন্ন উদ্ভাবনী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে অবদান রাখছেন তাদের মধ্যে যোগ্য কাউকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।

তবে অনেকে শিক্ষক দ্বিমত পোষণ করে বলেন, আইনের ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে। বুটেক্সের উপাচার্য হতে হলে টেক্সটাইল ব্যাগ্রাউন্ড লাগবে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব অধ্যাপক যাদের স্নাতক পর্যায়ে টেক্সটাইল ছিল না তারা উপাচার্য হতে পারবে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা - dainik shiksha বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি - dainik shiksha জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল - dainik shiksha দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি - dainik shiksha কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052270889282227