বুটেক্সে টিএমডিএম বিভাগের অগ্রযাত্রা ও স্মার্ট বাংলাদেশ

সাজ্জাতুল ইসলাম শামীম |

বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মতো যে কয়টি উল্লেখযোগ্য বিষয় রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশর তৈরী পোশাকশিল্প। এটি শুধু বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচয়ই করিয়ে দেয়নি, গড়েছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ এখন বিশ্বের কাছে সুপরিচিত নাম। তাই এই শিল্পকে নিয়া চিন্তা, গবেষণা করা ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট টেক্সটাইল গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে লাগবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, বাড়াতে হবে ভ্যালু এ্যাডেড রপ্তানি। সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে টেক্সটাইল গার্মেন্টস শিল্প গড়তে হবে স্মার্ট মেশিনারির মাধ্যমে, যার ভিত্তি হলো ডিজিটাল সংযোগ। এ সকল প্রযুক্তি আবিষ্কার, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিবর্তনের জন্য দরকার পারদর্শী স্মার্ট বস্ত্র প্রকৌশলী যার সূতিকাগার বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স)। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গোড়াপত্তন হয়েছিলো ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। যা পূর্ণতা পায় তার সুযোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে- এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা গতানুগতিক কারিকুলামকে আরও সময়োপযোগী,  যুগপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৪ মে প্রফেসর ড. মো. শেখ মমিনুল আলমের নেতৃত্বে বাস্তবভিত্তিক ও গবেষণাধর্মী শিক্ষাকে উপজীব্য করে অবতারণা করা হয় টেক্সটাইল মেশিনারি ডিজাইন এন্ড মেইনটেন্যান্স (টিএমডিএম) বিভাগের।

টেক্সটাইল, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও কম্পিউটার ছাড়া বিজ্ঞানের মূল বিষয়সমূহের সমন্বয়ে আগামীর প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের কথা মাথায় রেখে এই বিভাগের  কারিকুলাম রচিত হয়েছে। প্রতিবছর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৪০ জন শিক্ষার্থী এই বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। এখন পর্যন্ত এই বিভাগের দুটি ব্যাচের ৭০ জন শিক্ষার্থী পাস করে বের হয়ে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে টেক্সটাইলের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত আছেন।

এই বিভাগ সৃষ্টিতে যার ভূমিকা প্রধান, তিনি হলেন প্রফেসর ড. মো. শেখ মমিনুল আলম। তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি, বোল্টন ইউনিভার্সিটি (ইউকে), টয়োহার্সি ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি  (জাপান) থেকে বিএসসি, এমএসসি ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন। একাধিক বই ও অর্ধশত আন্তর্জাতিক পেপারের রচয়িতা এই শিক্ষক বর্তমানে এই বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ গবেষণা করা, গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান উৎপাদন করা এবং দেশ, জাতি তথা সমগ্র বিশ্বের কল্যাণে কাজ করা। তাই গবেষণার মাধ্যমে টেক্সটাইল খাতকে আরও টেকসই ও স্মার্ট করে গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছে বিভাগটি। দেশের অভ্যন্তরে  বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই বিভাগের  ছাত্র ও শিক্ষকদের গবেষণা আলোচিত হয়েছে, প্রদর্শিত হয়েছে এবং বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। বিভাগের গবেষণাসমূহ বিভিন্ন  আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। 

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি টেক্সটাইল। দেশের মোট রপ্তানির ৮০ ভাগের বেশি আসে এই খাত থেকে। কিন্তু কাঁচামাল ও উন্নত মেশিনারি ক্রয় করতে প্রচুর অর্থ প্রতিবছর বিদেশে চলে যায় যেটি আমাদের প্রত্যাশিত নয়। তাই অদূর ভবিষ্যতে দেশের অর্থ দেশে থাকবে, আধুনিক মেশিনারি উৎপাদন হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই বিভাগের শিক্ষক ছাত্ররা ড. মো. শেখ মমিনুল আলমের নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। 

লেখক :   সাজ্জাতুল ইসলাম শামীম, সহ-সভাপতি, বুটেক্স সাংবাদিক সমিতি 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025269985198975