বুলি না আউড়িয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করা জরুরি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা এখনো চোখ রাঙাচ্ছে নিয়মিত, কিন্তু পূর্বের মতো এর ভয়াবহতা মানুষের মনে দাগ কাটছে না এতটা। এর বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। তবে কারণ যাই হোক, করোনায় কমবেশি প্রতিটা খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারো ক্ষতি কম হয়েছে, কারো ক্ষতি বেশি হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্বিমত থাকতে পারে। কিন্তু একটা জায়গায় সবাই একমত হবে, করোনায় শিক্ষা খাতের যে ক্ষতি হয়েছে তা অনেকাংশে অপূরণীয়। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। 

নিবন্ধে আরও জানা যায়, করোনার কারণে প্রথম ধাপে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দ্বিতীয় ধাপের বন্ধ এখনো চলমান। বৈষম্যের শিক্ষা খাত করোনার কারণে আরো বেশি বৈষম্য দৃশ্যমান হয়েছে। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একটা বড়সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রাথমিকে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নতুন বছরের দুই মাস চলে গেলেও এখনো অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারেনি। প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে দেয়া হয়েছে আটো প্রমোশন। শিক্ষার্থীরা নামমাত্র জ্ঞান অর্জন করে উপরের ক্লাসে প্রমোশন পেয়ে গেছে। যার কারণে নতুন ক্লাসের পড়াশোনা বুঝতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষাগুলোতেও দেয়া হয়েছে অটোপ্রমোশন কিংবা নামমাত্র মূল্যায়ন পরীক্ষা। এর প্রভাব পড়েছে সদ্য পাস করা এসএসসি এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ওপর। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি এ প্লাস পেয়েছে সদ্য পাস করা এইচএসসি শিক্ষার্থীরা। এত ভালো রেজাল্ট করার পরও মনমতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না তারা। একই চিত্র এসএসসির বেলায়ও। এ প্লাস পেয়েও পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষায় ভালো রেজাল্টের মূল্য কোথায় গিয়ে ঠেকল? করোনা আমাদের শিক্ষা খাতে অটোপাস নামক এক জঞ্জালের আবির্ভাব ঘটিয়েছে।

গ্রামের দিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা এমনিতেই নাজুক, করোনার প্রভাবে এদের অবস্থা খুবই সূচনীয়। শিক্ষার্থীদের স্মার্ট ডিভাইস সংকট। এ যেন দুয়ে দুয়ে চার হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। তার ওপর করোনার প্রভাবে অর্থনীতি ভঙ্গ অবস্থায়। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানোর পরিবর্তে কর্মক্ষেত্রে পাঠাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। শিক্ষার হার এবং পাসের হার এখন কেবল সংখ্যার খেলা।

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থার ভঙ্গুর দশা আরো ভঙ্গুর অবস্থায় পরিণত হয়েছে। করোনায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর প্রকৃত তথ্য এখনো সরকারের অজানা। কত হাজার কিশোরীর স্বপ্ন হাতের লাল মেহেদীর আভায় চাপা পড়েছে সে তথ্য কেউ রাখেনি। পাসের হার বাড়ছে, পাসের হার বাড়ছে- এই বুলি না আউড়িয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করা জরুরি। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলগামী করতে প্রয়োজন যথাযথ পদক্ষেপ।

লেখক : শাওন ভুঞা তপু, শিক্ষার্থী।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026729106903076