বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের প্রবেশের ঘটনায় ছয় দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি তৃতীয় দিনে এসে স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে বুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়নি। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। বিকেলে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের।
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) বিকাল ৪টায় ভিসি স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আজও ভিসি স্যারের সঙ্গে একদফা মিটিং আছে। মিটিং শেষে সামগ্রিক একটা ব্রিফ হতে পারে।’
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। এ অবস্থায় ছাত্রলীগের সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতা গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তাদের কর্মী বহর নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে পরদিন নতুন করে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘন করে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম এ সমাগম ঘটান।
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকালে বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান।
এরপর রাতে বুয়েটের রেজিস্টার অধ্যাপক ফোরকান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করে ৮ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
ইমতিয়াজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করাসহ ছয় দফা দাবিতে রবিবার সকাল থেকে ফের বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে রবিবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
তবে ইমতিয়াজকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এবং বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।
জায়ামাত-শিবির-রাজাকার, তাড়াতাড়ি বাংলা ছাড়, মৌলবাদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, শিবিরের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, শিবিরের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয় সমাবেশ থেকে।