বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) মসজিদের সামনে একটি কাভার্ডভ্যান আটকিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে চালকের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে চালকের ডাক-চিৎকারে শাহবাগ থানার একটি টহল টিম এগিয়ে আসলে তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এই সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে আটক করে। বর্তমানে তারা জেলহাজতে আছে।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ডিএমপি শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ছানী নাঈম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাতে বুয়েট এলাকায় টহল ডিউটি করার সময় তাদের হাতেনাতে আটক করি।’
গ্রেফতাররা হলেন- ঢাবির থিয়েটার ডিপার্টমেন্ট শিক্ষার্থী ফজলে নাবিদ সাকিল (১৯), ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট শিক্ষার্থী রাহাত রহমান (২১) ও সমাজকর্ম ডিপার্টমেন্ট শিক্ষার্থী সাদিক আহাম্মদ (২০)। তারা তিন জনই ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। ফজলে নাবিদ সাকিল ও সাদিক আহাম্মদ ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের গণরুমে, রাহাত রহমান চকবাজারের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
এসআই ওমর ছানী নাঈম জানান, শনিবার দিবাগত রাতে তারা বুয়েট মসজিদের সামনে একটি কাভার্ডভ্যান আটকিয়ে চালকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে ৫০ হাজার টাকা না পেয়ে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ওই মুহূর্তে পুলিশের টহল টিম দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে চকবাজার থানা পুলিশের সহায়তায় তাদের আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
ট্রাক চালক আবু তাহের জুয়েল জানান, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আমার ছোট ভাই রাশেদসহ লালবাগ থেকে টঙ্গীর যাচ্ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বুয়েট মসজিদের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছালে আসামিরা একটি লাল ও কালো রঙের মোটরসাইকেল এসে গাড়ির গতিরোধ করে। পরে ট্রাকের সামনে তাদের মোটরসাইকেলটি রেখে আমাকে ও আমার ভাইকে গাড়ি থেকে নামতে বলে।
তিনি জানান, তারা আমাদের হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারপিট করে পকেটে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেয়। পরে ডাক-চিৎকার দিলে তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় শাহবাগ থানার টহল দলের এসআই ওমর ছানী নাঈম এসে তাদের আটক করে। পরে পুলিশ সেখান থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
ডিএমপি শাহবাগ থানায় ট্রাক চালক আবু তাহের জুয়েল বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি দস্যুতার মামলা করেন। পরে গতকাল রবিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করে গ্রেফতার দেখিয়েছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও আদালত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’