বৃত্তি পেয়েও ভোগান্তিতে জবি শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি |

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ পেলেও আইটি জটিলতায় সম্পূর্ণ বেতন দিয়েই ভর্তি হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অন্যদিকে যেসব বিভাগে ভর্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেসব বিভাগের বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য প্যানেলে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা সমন্বয় হয়নি। ফলে বেতনের পুরো টাকা দিয়েই ভর্তি হতে হয়েছেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা বিষয়টি নিয়ে আইসিটি সেলে যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন বৃত্তি শাখা থেকে বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা পাঠানো হয়নি তাই বৃত্তি দপ্তর বা রেজিস্ট্রার দপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তার দাবি দীর্ঘসূত্রিতা রোধে শিক্ষার্থীদের প্যানেলে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা সমন্বয় করার কাজটি এবার আইসিটি সেল থেকে সরাসরি বৃত্তি শাখার তত্ত্বাবধানে আনা হয়েছে।

ভোগান্তির শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি এ বছর অবৈতনিক বৃত্তি পেয়েছি। কিন্তু সেমিস্টারে ভর্তির সময় আমাদের বেতনের টাকা কমানো হয়নি। আইটি অফিসে গেলে তারা বলে বৃত্তি শাখায় যোগাযোগ করতে। বৃত্তি শাখায় গেলে তারা বলেছে পরের সেমিস্টারের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। কিন্ত আমার তো আর একটা সেমিস্টারই আছে। সেক্ষেত্রে আমার এই সেমিস্টারেও পুরো টাকাটাই দিয়ে ভর্তি হতে হলো। বৃত্তির সুবিধা পাবো না।

ভোগান্তির শিকার চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার ভর্তির তারিখ শেষ হবে রোববার। আমি অবৈতনিক বৃত্তি পেয়েছি। কিন্তু আমি এখনো ভর্তি হতে পারিনি। কারণ আমার আইডিতে এখনো বৃত্তির টাকা সমন্বয় করা হয়নি। সম্পূর্ণ ফি দেখাচ্ছে। যদি আমার টাকা সমন্বয় করা না হয় তাহলে হয়তো আমার সম্পূর্ণ টাকা দিয়েই ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। আর আমি যদি সম্পূর্ণ টাকা দিয়ে ভর্তিই হয়ে যাই তাহলে আমার অবৈতনিক বৃত্তি পেয়ে লাভটাই কি হলো?

তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি বৃত্তি পেয়েছি। বৃত্তির তালিকা অনেক আগেই বিভাগে দেখেছি। কিন্তু এখনো আমার বৃত্তির টাকা সেমিস্টার ভর্তি ফিয়ের সঙ্গে সমন্বয় হয়নি। কবে হবে সেটাও বুঝতে পারছিনা। নির্ধারিত সময়ে ভর্তি না হলে আবার জরিমানাও দিতে হবে। 

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সাধারণত বৃত্তি প্যানেল তাদের কাজ শেষ করে আমাদের কাছে নথি দেয়, তখন আমরা বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করি। বৃত্তি প্যানেল বৃত্তি সম্পর্কিত সব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাদের কাজ শেষেই সবকিছুর সমাধান হবে। যাদের বৃত্তি খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজন তারা বৃত্তি প্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোসা. আশরা-উন-আকতার তুহিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের প্যানেলে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা সমন্বয় করার কাজটি আইসিটি সেল থেকে বৃত্তি শাখার তত্ত্বাবধানে আনা হয়েছে। সবার প্যানেলে বৃত্তির টাকা সমন্বয় করার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করি।

তিনি আরো বলেন, এখন আর আইসিটি সেলে যোগাযোগ করতে হবেনা। প্রয়োজনসাপেক্ষে শিক্ষার্থীরা বৃত্তি শাখায় এসে যোগাযোগ করতে পারবেন, তাহলে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হবে। আর যাদের ভর্তির সময় শেষ বা সম্পূর্ণ ফি দিয়েই ভর্তি হয়েছে তাদের টাকা পরবর্তী সেমিস্টারে সমন্বয় করা হবে। 

প্রসঙ্গত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বৃত্তি নীতিমালা-২০১৩ এর আলোকে শিক্ষার্থীদের মেধা ও অবৈতনিক বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে গত ১৪ মার্চ রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। যার প্রেক্ষিতে গত ১৫ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারিত ফরমে বৃত্তির জন্য আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই বাছাই শেষে গত জুনে বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা নিজ নিজ বিভাগে পাঠানো হয়। মেধা ও অবৈতনিক বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারে ভর্তির ফিয়ের সঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সমন্বয় করা হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে ঢাকায় আসছেন ফিফা সভাপতি - dainik shiksha ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে ঢাকায় আসছেন ফিফা সভাপতি ঘুষ চাওয়ায় ধোলা*ই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাকে - dainik shiksha ঘুষ চাওয়ায় ধোলা*ই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাকে লটারির বাইরে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি নির্দেশনা - dainik shiksha লটারির বাইরে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি নির্দেশনা ভর্তি হবে সন্তান, জন্মসনদের চক্রাকার ভোগান্তিতে বাবা-মা - dainik shiksha ভর্তি হবে সন্তান, জন্মসনদের চক্রাকার ভোগান্তিতে বাবা-মা একাদশের শিক্ষার্থীদের টিসির আবেদন শুরু ১৭ নভেম্বর - dainik shiksha একাদশের শিক্ষার্থীদের টিসির আবেদন শুরু ১৭ নভেম্বর বাংলাপ্রেমী শিক্ষক উইলিয়াম রাদিচে আর নেই - dainik shiksha বাংলাপ্রেমী শিক্ষক উইলিয়াম রাদিচে আর নেই কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032429695129395