সব স্কুল-কলেজগুলোকে বৃত্তির সফটওয়্যারের পাসওয়ার্ড দুই দিনের মধ্যে পরিবর্তন করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানের পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা ঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রতারকদের মাধ্যমে ভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এন্ট্রি করে বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ নির্দেশনা দিয়ে জারি করা আদেশ প্রকাশ করা হয়েছে।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, সব ধরণের বৃত্তির টাকা জিটুপি পদ্ধতিতে ইএফটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানোর কার্যক্রম চলছে। প্রতিষ্ঠানের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য অর্থ বিভাগের এসপিএফএমএস কর্মসূচির এমআইএস সফটওয়্যারে প্রতিষ্ঠান থেকে এন্ট্রি করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, প্রতিষ্ঠান থেকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। ফলে প্রতারক চক্র শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব নম্বরের পরিবর্তে ভিন্ন ব্যাংক হিসাব নম্বর এন্ট্রি করে বৃত্তির অর্থ আত্মসাৎ করার সম্ভাবনা থাকতে পারে। এ অবস্থায় দুই কর্মদিবসের মধ্যে এমআইএস সফটওয়্যারে স্কুল-কলেজের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার নির্দেশ দিয়েছে অধিদপ্তর।
পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কর্মকর্তাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছে অধিদপ্তর। অধিদপ্তর বলছে, প্রতিষ্ঠান প্রধান বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মেধাবৃত্তির সফটওয়্যারের পাসওয়ার্ড ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করবেন। প্রতিবার এন্ট্রি কার্যক্রম শেষ হওয়ার সাথে সাথে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হবে। এন্ট্রি কার্যক্রম চলমান না থাকলেও প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এন্ট্রিকৃত তথ্য (বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর নাম ও হিসাব নম্বর ইত্যাদি) সময় সময় সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
আগে এন্ট্রি করা তথ্যের ক্ষেত্রে ব্যাংক হিসাবধারীর নাম ও হিসাব নম্বর সংক্রান্ত কোনো ধরনের গড়মিল পরিলক্ষিত হলে তা সংশোধন করে তাৎক্ষণিকভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং অর্থ বিভাগের এসপিএফএমএস কর্মসূচিকে জানাতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বলেছে অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর আরও বলছে, ইউজার আইডি, পাসওয়ার্ড ও তথ্যের গোপনীয়তা যথাযথভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য আবশ্যিকভাবে নিজ প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার থেকে সফটওয়্যারে এন্ট্রি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের তথ্য এন্ট্রির ক্ষেত্রে কোন শিক্ষার্থীকে দায়িত্ব দেয়া যাবে না বা শিক্ষার্থীকে আইডি পাসওয়ার্ড দেয়া যাবে না। ইউজার আইডি পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে কোন অবস্থায় নিজ প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা কম্পিউটার দোকান হতে তথ্য এন্ট্রি করা যাবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুক, হোয়াটস এ্যাপ, মেসেঞ্জার ইত্যাদি) বৃত্তির এমআইএস সফটওয়্যারের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড প্রকাশ করা যাবে না।
এর আগে গত মার্চ মাসে অধিদপ্তর থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের তথ্য এন্ট্রির বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছিলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের সেসব নির্দেশনাও মানতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। সে নির্দেশনায় বলা হয়ছিলো, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের এন্ট্রি করা তথ্যা যথাযথভাবে এন্ট্রি হয়েছে কিনা তা মনিটরিং করার জন্য দুই জন শিক্ষককে দায়িত্ব দিতে হবে। অনলাইনে এন্ট্রিকৃত তথ্যের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য প্রিন্টকপি শিক্ষার্থীদের দিতে হবে। এন্ট্রিকৃত তথ্য সঠিক আছে বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদ্বয় এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রত্যয়ন গ্রহণ করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যেসব বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী বৃত্তির টাকা এখনও পায়নি তাদের তথ্য পুনরায় যাচাই করে প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য এন্ট্রির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ভুল হিসাব নম্বর দেয়ার ফলে বৃত্তির টাকা অন্য কোন একাউন্টে চলে গেলে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা দায়ী থাকবেন।
অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, এসব নির্দেশনা অনুসরণ না করার ফলে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা অন্য ব্যক্তির হিসাব নম্বরে পাঠানো হলে প্রতিষ্ঠান প্রধান বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দায়ী থাকবেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।