বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান নিয়ে শিল্পমন্ত্রীর সংশয়

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা পড়ান, কী পড়ানো হয় তা তদারকি করা দরকার। এসব বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মন্ত্রী।  

রোববার (২২ অক্টোবর) মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিতে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। 

মন্ত্রী বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভিন্ন ডিগ্রি নিচ্ছে। কিন্তু চাকরির প্রতিযোগিতায় তারা কোয়ালিফাই করতে পারছে না। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কতটুকু আছে, আমি জানি না।’

তিনি বলেন, ‘আহসান উল্লাহ, ওমুক-তমুক, কী শান্তা মারিয়াম- অনেক, শত শত বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু যখন চাকরির জন্য যায়, তাদের রিকমেন্ডশনের (সুপারিশ) জন্য আসে। আমি কষ্ট পাই, তাদের বাবা-মায়েরা আসেন, প্রতিনিয়ত ফেস করতে হয়। তারা বলেন, এমপি সাহেব আপনাকে ’৮৬ সাল থেকে ভোট দিচ্ছি। এটা করেছি, আমার ছেলেটার চাকরি হলো না। আমি বলি, আপনার ছেলে তো কোয়ালিফাই-ই করে না। তার তো আগে পরীক্ষায় পাস করতে হবে, তারপরেই না তদবির। মন্ত্রী সাহেবের তদবির।’

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘তখন আমার মনে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি লেখাপড়া হয়? সার্টিফিকেটিই দেয়, নাকি এরা ব্যবসায়িক সেন্টার? ব্যবসা তো অবশ্যই থাকবে, ঠিক আছে, তারপরও সেখানে কারা পড়ান, সেই জিনিসগুলো দেখা দরকার। সেখানে গরিব বাবা-মা পয়সা দিয়েই তো নিশ্চয়ই পড়ান, ফ্রি তো পড়ে না। আমরা চাই না সবাই ব্যারিস্টার হবে, সাইনটিস্ট হবে, তা নয়। মিনিমাম যে লেভেলগুলোতে আমাদের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার দরকার, টেকনিশিয়ান দরকার, এগুলো তৈরির জন্য যথাযথ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দরকার। সেখানে তদরকি ও ক্লোজ সুপারভিশন দরকার। সেখান থেকেই তো বেরিয়ে আসবে। অশিক্ষিত লোক দিয়ে স্কিলড কাজ করতে পারা যাবে না। একটা লেভেল পর্যন্ত তাদের নিতে হবে।’

এখন নার্সিং পেশার চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবারগুলোতে দেখেছি চিকিৎসক হওয়ার চেয়ে নার্সিংয়ে আগ্রহ বেশি, আমার কাছে আসে। ভর্তির জন্য, রিকোমেন্ডশনের জন্য। আমি নিজেও পড়াই। বাংলাদেশে একটা সুবিধা আছে, ডাক্তার ও নার্স বানানোর জন্য। যেটা হয় আর কী, এত ছেলে-মেয়ে আছো এখানে। আমাদের তো রোগের অভাব নেই, হাসপাতালের অভাব নেই। বিদেশে তো রোগী পাওয়াও কঠিন হয়ে যায়, এক্সপেরিমেন্ট করবে কে? আমাদের তো রাস্তাঘাটে রোগী পড়ে থাকে। দে ক্যান টেক ইট। প্রত্যেক উপজেলায় এখন ল্যাবরেটরি হয়েছে। উপজেলা হেল্থকমপ্লেক্স, বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হয়েছে। হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই, আমরা নিজেরা শিখে শিখে তারপর শিখছি।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিতে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডির রিসার্স ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘৮১ শতাংশ খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান, ৮০ শতাংশ টেক্সটাইল, ৫৫ শতাংশ গার্মেন্টস, ৭০ শতাংশ ম্যানুফ্যাকচারারিং খাতের প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই।’

গবেষণায় বলা হয়, সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের শতভাগ ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠান গবেষণার জন্য কোনো অর্থ খরচ করে না। ঢাকা মেট্রোপলিটনের ৯৭ শতাংশ, রাজশাহীর ৯৩, খুলনার ৮৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান গবেষণার জন্য অর্থ খরচ করে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (ইউনিডো) কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ জাকি উজ জামান ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057039260864258