বেসরকারি স্কুলে ফাঁকা থাকবে চার লাখ আসন

রুম্মান তূর্য |

নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির পরও দেশের বেসরকারি স্কুলগুলোতে আগামী শিক্ষাবর্ষে লাখ চারেক আসন ফাঁকা থাকার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। মহানগর ও জেলার সদর উপজেলার বেসরকারি স্কুলগুলোর ভর্তির তথ্য পর্যালোচনা করে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনের চেয়ে এসব স্কুলের আসন ঢের বেশি। যত্রতত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের ফলে এমন পরিস্থিতি বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমানে দেশের সব সরকারি ও সরকারিকৃত স্কুল এবং মহানগরী ও জেলার সদর উপজেলার বেসরকারি স্কুলগুলোতে লটারির মাধ্যমে নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে অনলাইনে আবেদন নেয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত চলবে আবেদন গ্রহণ। পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ভর্তি কমিটি। ওই কমিটির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর সরকারি ও সরকারিকৃত স্কুলগুলোতে ১  লাখ ১৮ হাজার ১০৬ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির চাহিদা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে শুধু মহানগরী ও জেলার সদর উপজেলার বেসরকারি স্কুলগুলো মোট ১০ লাখ ৩ হাজার ৯৯৩টি আসনে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির চাহিদা দিয়েছে। 

ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক উইংয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, এখন পর্যন্ত সরকারি স্কুলগুলোতে ৪ লাখ ৮৮ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। মহানগর ও জেলার সদর উপজেলার বেসরকারি স্কুলগুলোতে আবেদন করেছেন ২ লাখ ৩৭ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী। গত বছরের তুলনায় এ বছর আবেদন কম। আগামী ২৬ নভেম্বর সকালে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির লটারির ফল প্রকাশ করা হবে।
ভর্তি কমিটি সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সরকারি স্কুলগুলোতে যারা সুযোগ পাবেন না তারা বেসরকারি স্কুল ভর্তি হতে পারবেন। 

তবে সরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন করেও চান্স না পাওয়া শিক্ষার্থীরা মহানগর ও জেলার সদর উপজেলার বেসরকারি স্কুলগুলোতেও ভর্তির পরও লাখ চারেক আসন ফাঁকা থাকবে।

ভর্তি কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এর কারণ শিক্ষাকে ব্যবসা বানানো। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন না করে পরিবার ও পরিচিত কয়েকজনকে চাকরি দেয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন। পাশাপাশি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। যেগুলো আসলে অপ্রয়োজনীয়। প্রতিষ্ঠান অপ্রয়োজনীয় হলেও তারা কোনো না কোনোভাবে এমপিওভুক্ত হয়েছেন, সরকারি বেতনভাতা পাচ্ছেন শিক্ষকরা। কিন্তু বাস্তবে শিক্ষার্থী নেই। এমপিও নীতিমালা অনুসারে যেখানে একটি শাখায় ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা সেখানে হয়তো আছে ৫ জন। এভাবেই চাকরির ধান্দায় বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হয়েছে।

বিষয়টি স্বীকার করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ভর্তি কমিটি সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদও। দৈনিক আমাদের বার্তাকে তিনি বলেন, শিক্ষার্থী না থাকলে আমরা স্কুল-কলেজের এমপিও বন্ধ করি। আমি দুটি প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধ করেছি। কিন্তু মাত্র একজন শিক্ষার্থী থাকলেও সে প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধ করার সুযোগ নেই।

মহাপরিচালক বলেন, পার্বত্য অঞ্চল, হাওরাঞ্চলসহ কোনো কোনো দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে যেখানে হয়তো কোনো ক্লাসে ৪ বা ৫ জন শিক্ষার্থী আছেন। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধ করা যায় না। কারণ ওই প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হলে ওই চার বা পাঁচজন শিক্ষার্থীর শিক্ষার সুযোগ নষ্ট হবে। শুধু শিক্ষার্থী সংখ্যাই নয়, আরো বিভিন্ন সূচক বিবেচনায় আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রাখতে হচ্ছে।

তবে পাশাপাশি গড়ে ওঠা কম শিক্ষার্থী থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে সরকারের একটি পরিকল্পনা আছে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এক করে দেয়ার চিন্তাভাবনা আছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের চাকরি যাবে না। তাদের পাসের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

 

[inside-ad-3] শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন।ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0020761489868164