ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা-নৈরাজ্যের অংশ সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: শ্যামল দত্ত

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

ব্যাংকিং খাতে যে নৈরাজ্য চলছে তারই একটি অংশ হচ্ছে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে না দেয়া। এমন মন্তব্য করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেছেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের এই কাজটি শক্ত হাতে করতে হবে।

গতকাল বুধবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে ‘সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা আরোপ বিষয়ে নেতাদের অবহিতকরণ’ শীর্ষক সভায় তিনি এ কথা বলেন। শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে ৮ হাজার কোটি টাকা চুরি হয়ে গেছে এতে কি চোরকে বাংলাদেশ ব্যাংকে আসতে হয়েছে। এই যে ৭ থেকে ৮টা ব্যাংকের মালিকের একটা গ্রুপ- এদের বিরুদ্ধে কথা বলাও কঠিন। তারা সম্প্রতি আরেকটা ব্যাংকে নিয়ে নিয়েছে। তাদের পত্রিকা আছে, টেলিভিশন আছে, অনলাইন আছে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের অধিকার আদায়ে আর বসে থাকার সময় নেই। রাস্তায় নামতে হবে। ইআরএফ একটি সম্মানজনক সংগঠন। এই আন্দোলনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনাদের এই আন্দোলন আরো বেগবান করুন। সাংবাদিকদের রিপোর্টগুলো সরকারকে সাহায্য করে। তাই এই আন্দোলন আরো জোরেশোরে চালান। দাবি আদায় করেই ছাড়ব। বিএফইউজের (একাংশ) মহাসচিব আব্দুল কাদের গণি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, ভল্টের সোনা চুরি- এসব খবর যেন জনগণের সামনে না আসে এজন্যই নিষেধাজ্ঞা। অতীতেও আমরা পেরেছি এবারো আমরা পারব। যে তথ্য নিয়ে জনগণের জন্য সংবাদ করা হয় তা কখনো তথ্য চুরি হতে পারে না। শুধু আর্থিক খাতেই কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবাই মিলে ভাগাভাগি করে খাওয়ার যে জায়গা সেটিই সাংবাদিকরা বন্ধ করে দিচ্ছে বলে আজ এই অবস্থা। তিনি বলেন, গণমাধ্যম একটা চরম সংকটকালে আছে। আমরা কেউ রাজনৈতিক কারণে তা স্বীকার করি আর না করি। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে।

ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, আমরা গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, আসা-যাওয়া করতে থাক, ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু দেড় মাস পার হলেও এখনো আমাদের সহকর্মী সাংবাদিক ভাইয়েরা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছেন না। আগে সাংবাদিকরা যেভাবে সহজে যে কোনো অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন তা এখন পারছেন না। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে এমন একজন গভর্নর তার দুর্বলতা ঢাকার জন্যই সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। এই গভর্নরের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো সূচকেই সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়া ডলারের দাম এক লাফে ৭ টাকা বাড়িয়ে দিলেন কিসের ভিত্তিতে? কিছু পীর-আওলিয়া-দরবেশের সুবিধা দিতে গিয়েই সাংবাদিকদের এমন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে আমি ধারণা করি। তারা দরজায় খিল দিয়েছে, কিন্তু দরজা বন্ধ করতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দরজায় খিল দিয়েই দরজা বন্ধ করে দিয়েছে বলে মনে করলে ভুল করবে। দুদকের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যদি সফল হয় তাহলে কেপিআই প্রতিষ্ঠান যেগুলো আছে সেগুলোয় সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় সফল হবে। আমরা প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গেটে অবস্থান নেব। গভর্নরকে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে দেব না। আমাদের অধিকার আদায় করেই ছাড়ব। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি শুক্কুর আলী শুভ বলেন, সাংবাদিক যদি বাংলাদেশে থাকে, তথ্য তাকে দিতেই হবে। যখনি তথ্য দেবে না তখনি লুকোচুরির বিষয় থাকবে বলে আমরা ধরে নেব। গভর্নর তো কিছুদিনের জন্য। আমাদের অধিকার আমাদেরই আদায় করে নিতে হবে। যুগে যুগে সাংবাদিকদের অধিকার আদায় করে নিতে হয়। সাংবাদিকরা কোনো ব্যক্তির জন্য কাজ করেন না, তারা পুরো দেশের জন্য কাজ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে অবশ্যই সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গেট বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি নেব। আমরা প্রয়োজনে প্রেস ক্লাবে রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নেব। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজে (একাংশ) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, ইআরএফের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ইউএনবি সম্পাদক ফরিদ হোসেন, ইআরএফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু প্রমুখ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048410892486572