সরকার পরিবর্তনের পর সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বৈশ্বিক সংঘাত-সংঘর্ষের প্রভাব। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে ব্যাংকের লেন্ডিং ও সেভিংস ইন্টারেস্ট নির্দিষ্ট হারে বেঁধে দেয়া প্রয়োজন। ব্যাংকিং সেক্টরে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের শুরু করা শোষণ ও প্রতারণা এখনো বিদ্যমান। সাধারণ মানুষ ব্যাংকে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের কষ্টার্জিত টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। সেই টাকা দিয়ে ব্যাংক ব্যবসা করে, বিনিয়োগের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে ঋণ দেয়, যার সুদের হার করোনাকালে ছিলো শতকরা ৯.০০।
তখন ব্যাংক ভেদে সেভিংস এর সুদ হার ছিলো ০.৫-২.৫ শতাংশ। বিগত সরকার মুদ্রাস্ফীতি রোধের নামে ব্যাংকের লেন্ডিং রেট ফ্লোটিং করে ১৪ শতাংশ করে দেয়। অথচ সাধারণ আমানতকারীরা ব্যাংকে সেভিংস একাউন্টে সুদ হার ০.৫-২.৫ শতাংশের বেশি পাচ্ছেন না। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে সেভিংস অ্যাকাউন্টে সুদের হার ০.৫ শতাংশ। কিসের বিনিময়ে ব্যাংকগুলোকে এভাবে মগের মুল্লুক প্রতিষ্ঠা করতে দিয়েছে সরকার।
আমানতকারী যাদের টাকা তারা ইনভেস্ট করে, তারা পায় ০.৫ -২.৫ শতাংশ, আর ব্যাংকগুলো নিয়ে নেয় বাকি ১১.৫-১৩.৫ শতাংশ লাভ। বর্তমান অন্তবর্তিকালীন সরকার দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করে ব্যাংকগুলোর অনেক ক্ষেত্রে কিছু ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষকে যে ব্যাংকগুলো ঠকাচ্ছে সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক লেন্ডিং ইন্টারেস্ট রেট আর সেভিংস ইন্টারেস্ট রেটের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট পার্থক্য বেঁধে দিতে পারে। যেমন-লেন্ডিং সুদের হার ১৪ শতাংশ হলে আমানতকারীর সেভিংস সুদের হার যেনো অবশ্যই ৬-৯ শতাংশের মধ্যে থাকে। যাতে করে ব্যাংকগুলো তাদের খরচসহ মোট লাভের ৫-৮ শতাংশ পেতে পারে। এতে ব্যাংকগুলোর মধ্যে দক্ষতা বাড়ানোর একটি প্রতিযোগিতাও সৃষ্টি হবে।
লেখক: মহাসচিব, জাতীয় সাংবাদিক সোসাইটি