ব্যাংক খাতের অনিয়ম তদন্তে কমিশন গঠন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ, সিআইডি ও দুদকের সহায়তায় আত্মসাৎকারীদের সম্পদ অধিগ্রহণ ও বিদেশে পাচারকৃত অর্থ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে। অর্থ প্রত্যাবাসনের জন্য বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা চেয়ে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ লক্ষাধিক কোটি টাকার উপরে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তাদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাত হয়েছে এবং তা বিদেশে পাচার করেছেন, যার সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান রয়েছে। আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ লক্ষাধিক কোটি টাকার উপরে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্যাংক সমূহের নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ, সিআইডি ও দুদকের সহায়তা গ্রহণ করে আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ ও বিদেশে পাচারকৃত অর্থ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে। অর্থ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা চেয়ে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে।
সরকার শীঘ্রই একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করবে যারা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যাংকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করবেন এবং ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনের জন্য ছয়মাসের মধ্যে একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের লক্ষ্য হলো সকল আর্ন্তজাতিক মানদন্ড পরিপালনে সক্ষম একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা। তবে এই উদ্দেশ্য অর্জনের কার্যক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়, আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার অর্থ আত্মসাৎকারীদের দেশি-বিদেশি সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশ হতে ফেরত এনে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর এই পুনর্গঠন এবং আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কার সময় সাপেক্ষ ব্যপার। তবে সরকার বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার ব্যপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ইতিমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতিমধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহেও সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে। নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত এসব অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে।