ব্যয় কমিয়েছেন ৯২ শতাংশ আমেরিকান

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নিউজ চ্যানেল সিএনবিসি ও ব্যবসায়িক ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি মর্নিং কনসাল্টের জরিপ অনুযায়ী, প্রায় সব আমেরিকানই তাদের ব্যয়ের পরিমাণ কমাচ্ছেন। সমীক্ষায় দেখা যায়, ৯২ শতাংশ আমেরিকানই ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন। ওয়ালমার্ট, টার্গেট, হোম ডিপো ও বেস্ট বাইয়ের মতো খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদনেও ভোক্তা ব্যয়ের পরিবর্তনের বিষয়টি উঠে এসেছে। যেখানে দেখা যায়, অধিকাংশ ভোক্তাই ব্যয়ের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অনেক বেশি সতর্ক বা হিসাবি হয়ে উঠেছেন। খবর সিএনবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির জের ধরে ক্রেতারা তাদের আর্থিক সংকোচনের বিষয়ে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে মধ্যম আয়ের আমেরিকানদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। জরিপের উত্তরদাতাদের মধ্যে ৯২ শতাংশ মধ্যম আয়ের আমেরিকান, যারা বছরে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ডলার পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়, এ শ্রেণীর লোকরা দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি ঘিরে খুব বেশি চিন্তিত।

নিম্ন ও উচ্চ আয়ের গোষ্ঠীর ৮৮ শতাংশ লোকই উচ্চমূল্য সম্পর্কে উদ্বিগ্ন বোধ করেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বছরে যাদের আয়ের পরিমাণ ১ লাখ ডলার, তাদের উচ্চ আয়ের ব্যক্তি ধরা হয়েছে। সমীক্ষা অনুসারে, এক বছর আগে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের মধ্যে ৯২ শতাংশই মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, যদিও আগের তুলনায় এ শ্রেণীর অবস্থার উন্নতির হয়েছে। তবে উচ্চমূল্যের আর্থিক চাপ নিম্ন ও উচ্চ আয়ের তুলনায় মধ্যম আয়ের ব্যক্তিদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

জরিপ অনুসারে, গত ছয় মাসে উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোক্তা নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়—এমন পণ্য যেমন বিনোদন সরঞ্জাম, গৃহসজ্জা, পোশাক, যন্ত্রপাতিসহ আরো অনেক ক্ষেত্রে খরচ কমিয়েছেন। দুই-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতারা মুদিপণ্য, ইউটিলিটি ও গ্যাসের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবহার কমানোর কথা জানান। মুদিপণ্যের ক্ষেত্রে অর্ধেকেরও বেশি ভোক্তা বলেছেন তারা সস্তা বিকল্প কিনছেন বা সাধারণত কম কিনছেন।

ওয়ালমার্টের প্রধান নির্বাহী ডগ ম্যাকমিলন খুচরা বিক্রয়ের প্রথম প্রান্তিকের উপার্জন সম্পর্কে বলেছেন, ‘গ্রাহক মূল্যস্ফীতির প্রভাবের কারণ খোঁজা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওয়ালমার্টের আমেরিকান শাখাগুলোয় প্রাইভেট ব্র্যান্ডের অনুপ্রবেশ আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১১০ বেসিস পয়েন্ট বেড়েছে। প্রাইভেট ব্র্যান্ড হচ্ছে স্টোর বা নিজস্ব ব্র্যান্ড, যা খুচরা বিক্রেতা দ্বারা বিকশিত এবং জাতীয় বা সুপরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর বিকল্প পণ্য তৈরি করে।

ব্যাংক অব আমেরিকার সমষ্টিগত ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড খরচের তথ্য অনুসারে, মে মাসে সাশ্রয়ী মূল্যের মুদি দোকানে অনেক বেশি ক্রেতা ভিড় করেছেন। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে বা যখন ভোক্তারা তাদের খরচ কমাতে চান, তখন সাশ্রয়ী মূল্যের মুদি দোকানগুলো কম দাম বেঁধে দেয়ার জন্য বেশিসংখ্যক গ্রাহককে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।

ব্যাংক অব আমেরিকার নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্লেষক রবার্ট ওহেমস বলেন, ‘‌আমরা মনে করি ভোক্তারা তাদের ক্রয় প্রবণতা বদলেছেন।’ তিনি এক্ষেত্রে ট্রেড ডাউনের কথা উল্লেখ করেন। ট্রেড ডাউন বলতে উচ্চমূল্যের বা প্রিমিয়াম পণ্য থেকে কম মূল্যের বিকল্প পণ্য কেনাকে বোঝানো হয়। রবার্ট ওহেমস বলেন, ‘‌পর্যবেক্ষিত ব্যয়ের প্রবণতা মূলত উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের কাছ থেকে ট্রেড ডাউনের প্রতিফলন, যা গ্রোসারি আউটলেট ও ওয়ালমার্টের মন্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

সিএনবিসি ও মর্নিং কনসাল্টের জরিপে অংশগ্রহণকারী উত্তরদাতাদের দুই-তৃতীয়াংশই বলেছেন, তারা ছয় মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে ৭৭ শতাংশ জানিয়েছেন তারা গৃহস্থালি পরিষেবা, স্বাস্থ্যসেবার মতো পণ্যের ওপর ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছেন। 

চলতি মাসের শুরুতে অনলাইনে জরিপটি পরিচালিত হয়। এতে ৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা - dainik shiksha শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022618770599365