ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হলো নয়ারহাটের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি |

কুড়িগ্রাম চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজটি ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বিঘ্নিত হবার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। রোববার ভোর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি নদের ভাঙনে বিলীন হতে শুরু করে। এলাকার শতশত মানুষ তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানটি চোখের সামনে নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখে কাঁদতে থাকেন।

কলেজ অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম মন্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের একমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অষ্টমীরচর ইউনিয়নসহ দুই ইউনিয়নের একমাত্র কলেজ এটি। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক পর্যায়ে
প্রায় সাড়ে ৫০০ এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বিলীন হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন দুটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত হয়ে পড়লো।

জানা গেছে, মূল ভবনটি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর হস্তান্তর করে। ভবনটি হস্তান্তরের আগে থেকেই এর পশ্চিমে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের গতি পথে থাকা এর তীরবর্তি বসতভিটা ও আবাদি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে যায়। কয়েকদিনের উজানের ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদের ভাঙন আরো তীব্র আকার ধারণ করে। এতে করে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের চরাঞ্চলের একমাত্র কলেজ দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

স্থানীয়রা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত বছর তীব্র ভাঙনে নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের শতাধিক পরিবার বাস্তুহারা হয়। ভাঙনে বিলীন হয় দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাংশ। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অনুরোধ করলে নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ
ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। গত এক বছরে ভাঙনের কবল থেকে প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় স্থায়ী কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। ফলে আবারো ভাঙনের কবলে পড়ে ইউনিয়নের একমাত্র কলেজটি বিলীন হয়ে গেলো। তবে, প্রতিষ্ঠানটির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ওই এলাকায় ভাঙন হুমকিতে রয়েছে দক্ষিণ খাওরিয়া বাজারসহ স্থানীয় শতাধিক বসতভিটা। ভাঙন আতঙ্কে অনেকে
ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন।

নয়ারহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত থাকে। কিন্তু যে সময় ভাঙন রোধে কাজ করার দরকার সে সময় কোনো কাজ হয় না। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে আগামী দুয়েক মাসের মধ্যে কয়েকশ হেক্টর আবাদি জমিসহ শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠাইট বিলীন হওয়ায় এই চরাঞ্চলের মানুষের সন্তানদের পড়ালেখা ব্যাহত হবে।

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী  মো. বুলবুল আহমেদ বর্ণ, নবম শ্রেণির ছাত্রী সমাপ্তি জাহান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের স্কুলটি আজ বিলীন হয়ে গেলো, এখন কীভাবে লেখাপড়া করবো তা নিয়ে চিন্তায় পরে গেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজটি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছিল। ভবনটি বিলীন হলেও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যেনো ব্যাহত না হয় সেজন্য আমরা পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে প্রায় দু’কিলোমিটার অভ্যন্তরে স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম শুরু করেছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ - dainik shiksha ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ - dainik shiksha উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028300285339355