প্রখ্যাত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক মার্টিন অ্যামিস ৭৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যনালির ক্যানসারে ভুগছিলেন। মার্টিনের স্ত্রী ইসাবেল ফনসেকা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার নিজ বাড়িতে এই লেখকের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মার্টিনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন নোবেল বিজয়ী লেখক কাজুও ইশিগুরো ও বুকারজয়ী লেখক সালমান রুশদি।
মার্টিন অ্যামিস ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত ‘মানি’ এবং ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত ‘লন্ডন ফিলডস’ উপন্যাসের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন। জীবদ্দশায় ১৪টি উপন্যাস ও বেশ কয়েকটি ননফিকশন বই লিখেছেন তিনি। মার্টিনকে তাঁর সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী লেখক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে জন্মেছিলেন এই প্রখ্যাত লেখক। তাঁর বাবা স্যার কিংসলে অ্যামিস নিজেও ছিলেন একজন কবি ও ঔপন্যাসিক। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর মার্টিন অ্যামিস তাঁর বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য র্যাচেল পেপার্স’। বাবার মতো প্রথম উপন্যাস দিয়েই জিতে নেন সমারসেট মম পুরস্কার।
মার্টিনের সমসাময়িক লেখক সালমান রুশদি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি তাকভর্তি নিজের বই রেখে যেতে চেয়েছিলেন এবং সেটি করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন তাঁর কণ্ঠস্বর থেমে গেছে। তাঁর বন্ধুরা তাঁকে মিস করবে। তবে আমাদের কাছে তাঁর তাকভর্তি বই রয়েছে। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যেই আমরা তাঁকে খুঁজে পাব।
এদিকে আরেক নোবেল বিজয়ী লেখক স্যার কাজুও ইশিগুরো বলেছেন, তিনি আমাদের প্রজন্মের একজন আদর্শস্থানীয় ঔপন্যাসিক। ব্যক্তিগতভাবে তিনি আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন। পৃথিবী বদলে যাবে, কিন্তু তাঁর কাজগুলো থেকে যাবে।
মার্টিন অ্যামিস ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রেই ছিলেন। তাঁর বন্ধু ও বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক জাচারি লিডার বলেন, মার্টিন ছিলেন উদার ও কোমল মনের অধিকারী।
ভিনটেজ বুকসের সম্পাদক মিশাল শাভিট বলেন, ‘মার্টিন অ্যামিস ছাড়া একটি বিশ্ব কল্পনা করা কঠিন। তিনি ছিলেন বিদগ্ধ, পণ্ডিত ও নির্ভীক লেখক। এক কথায় বিস্ময়কর একজন মানুষ ছিলেন তিনি।’
এক বিবৃতিতে শোক জানিয়েছে বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন। তারা বলেছে, ‘আমাদের বন্ধু ও লেখক মার্টিন অ্যামিসের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকগ্রস্ত। তাঁর স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের কথা ভেবে খারাপ লাগছে। তিনি ব্রিটিশ সংস্কৃতিতে অসম্ভব অবদান রেখে গেছেন।’
বুকার পুরস্কারের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে বলা হয়েছে, গত ৫০ বছরের সবচেয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত লেখক মার্টিন অ্যামিসের মৃত্যুর খবর শুনে আমরা স্তম্ভিত। আমরা তাঁর পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।