ব্রিটিশ স্কুলে অনাগ্রহ বাড়ছে ফরাসি, জার্মান ও স্প্যানিশ ভাষা শেখায় : জরিপ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ব্রিটিশ স্কুলে ফরাসি, জার্মান ও স্প্যানিশ ভাষা শেখায় অনাগ্রহ বাড়ছে। ক্যারিয়ারের জন্য বিদেশি ভাষা শেখার প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে যুক্তরাজ্যের মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক জরিপের বরাতে এমন তথ্য দিয়েছে বিবিসি।

যুক্তরাজ্যের ভাষা দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা জিসিএসই (জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন) দিতেও এসব শিক্ষার্থীর আগ্রহ কম বলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

যুক্তরাজ্যের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ২ হাজার ৮৩ জন শিক্ষার্থীদের ওপর জরিপ চালায় ব্রিটিশ কাউন্সিল। জরিপে দেখা যায়, জিসিএসইতে একটি ভাষা শেখার জন্য মাত্র ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী পরিকল্পনা করেছে। ১৪ বছর বয়সের পরে বিদেশি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী কমতে দেখা যায়। 

ডিপার্টমেন্ট ফর এডুকেশন (ডিএফই) বলেছে, প্রতিটি শিশুর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বিদেশি ভাষার বিষয়ে ‘দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত’ নিতে যুক্তরাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৩৬টি স্কুলের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নতুন ভাষা শেখার সুযোগ চায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের একটি ভাষা শেখার সুযোগ থাকা উচিত বলে জরিপে ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে, যেখানে ৪৬ শতাংশ শিক্ষার্থী বলেছে, তারা নতুন ভাষা শিখতে পছন্দ করে। 

তবে প্রতি চারজনের মধ্যে একজন জিসিএসই বা উচ্চতর পর্যায়ে বিদেশি ভাষার শেখার বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৯ জন মনে করে, স্কুলের পরে তাদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য বিদেশি ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা নেই। 

ইংল্যান্ডে ১৪ বছর বয়সের পরে বিদেশি ভাষা অধ্যয়ন বাধ্যতামূলক নয়। এই নিয়ম ২০০৪ সাল থেকে কার্যকর হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার মানদণ্ড নির্ধারণের সরকারি অফিস অফস্টেড বলছে, বিদেশি ভাষার জন্য জিসিএসই স্তরে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের সংখ্যা ‘উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে’। 

এই বছরে জয়েন্ট কাউন্সিল ফর কোয়ালিফিকেশনের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ফরাসি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অর্ধেক হয়েছে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি ভাষায় শেখার জন্য ১ লাখ ৪৭ হাজার শিক্ষার্থী জিসিএসইতে ভর্তি হয়। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এই সংখ্যা কমে ১ লাখ ২৩ হাজার শিক্ষার্থী হয়। 

জার্মান ভাষার ক্ষেত্রেও জিসিএসইতে ভর্তি সংখ্যা কমে যায়। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫২ হাজার শিক্ষার্থী থেকে কমে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এসে ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী জার্মান ভাষা শেখার জন্য ভর্তি হয়। তবে স্প্যানিশ ভাষার ক্ষেত্রে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৮৫ হাজার থেকে বেড়ে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ১ লাখ ৭ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। 

‘এ’ লেভেলে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে স্প্যানিশ ভাষায় ভর্তির সংখ্যা ফরাসি থেকে ছাড়িয়ে গেছে এবং তখন থেকেই এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে। 

আরবি, পোলিশ ও ম্যান্ডারিনের মতো অন্যান্য ভাষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা ২০১৫ সাল থেকে প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। 

ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্কুল উপদেষ্টা ভিকি গফ বলেছেন, জনপ্রিয়তা হ্রাসের সম্মুখীন ভাষাগুলোর জন্য এই প্রবণতা কমানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কম সুবিধাপ্রাপ্ত শিশুরা বিশেষ করে ছেলেরা নতুন ভাষা শিখতে অনীহা দেখায়। অভিভাবকেরা নতুন ভাষা শেখার জন্য কোনো প্রয়োজন অনুভব না করাসহ বিভিন্ন অসুবিধার জন্য এই অনীহা দেখা যায়। 
 
গফ আরও বলেন, জার্মানির মতো ভাষা ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পোলিশ দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের ১০ জনের এর মধ্যে একজন শিশু ইতিমধ্যে বাড়িতে অন্য ভাষায় কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। 

ডিএফইয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে কনজারভেটিভরা ক্ষমতা নেওয়ার আগে বিদেশি ভাষার অধ্যয়ন কমে যায়। তবে জিসিএসই স্তরের প্রায় ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এখন একটি বিদেশি ভাষা অধ্যয়ন করে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027859210968018