ভক্ত-সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন শান্ত

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

সাত ম্যাচে জয় তিনটি। জয়ের সংখ্যা হিসেব করলে আগের সব আসরকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, প্রথম আসরের পর এবারই প্রথম খেলল সেরা আটে। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্স বিশেষ করে, ব্যাটিং বিভাগ ছিল খুবই নড়বড়ে। ব্যাটিং ব্যর্থতা মাথায় নিয়েই শেষ ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট শেষ করল তারা।

হতাশায় ভরা এই বিশ্বকাপে নিজেদের সামগ্রিক পারফরম্যান্স নিয়ে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের পর ব্যাটিং ব্যর্থতা মেনে নিয়ে কয়েকবার ‘সরি’ বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। 

সুপার এইটের প্রথম দুই ম্যাচ হারলেও আফগানিস্তান ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ছিল সেমি-ফাইনালে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ। সেন্ট ভিনসেন্টে মঙ্গলবার বোলারদের নৈপুণ্যে আফগানদের ১১৫ রানে থামায় তারা। পরে ১২.১ ওভারে এই রান তাড়া করতে পারলেই অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানকে টপকে তারাই পেত সেরা চারের টিকেট।

সেই সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ। এমনকি পারেনি সান্ত্বনার জয় দিয়েও আসর শেষ করতে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটিতে ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতায় ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৮ রানে হেরেছে তারা। ৪৯ বলে ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দলের পরাজয় দেখেন লিটন কুমার দাস।

চলতি বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের মাত্র দ্বিতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস এটি। এর আগে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৬৪ রান করেন সাকিব আল হাসান। এছাড়া দুটি করে চল্লিশছোঁয়া ইনিংস খেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়। এতেই স্পষ্ট দলের ব্যাটিংয়ের সামগ্রিক চিত্র।

সাত ম্যাচ মিলিয়ে একশর বেশি রান করতে পেরেছেন শুধু চার ব্যাটসম্যান। ১২৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ১৫৩ রান নিয়ে সবার ওপরে হৃদয়। বাকি স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট ১১০ও ছুঁতে পারেনি। লিটন, শান্ত, তানজিদ হাসান, মাহমুদউল্লাহরা তো ব্যাট করেন একশরও নিচে স্ট্রাইক রেটে।

স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটসম্যানদের ব্যক্তিগত ব্যর্থতার ছাপ পড়েছে দলের স্কোরেও। সাত ম্যাচে মাত্র একটিতে দেড়শ ছুঁতে পেরেছে বাংলাদেশ। সেটিও তুলনামূলক দুর্বল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১১০ রানও করতে পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

প্রথম রাউন্ডে চার ম্যাচের তিনটি জিতে সুপার এইটের টিকেট পেলেও, পুরোটাই ছিল মূলত বোলারদের কাঁধে চড়ে। সেটিও সেন্ট ভিনসেন্ট ও নিউ ইয়র্কের বোলিং সহায়ক উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে। ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোলারদের রুগ্ন দশাও দেখা যায় বেশ বাজেভাবে।

টুর্নামেন্টের যাত্রা শেষ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে সামগ্রিক পর্যালোচনা করে নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নেন শান্ত।

“বিশ্বকাপের পুরো যাত্রা সম্পর্কে বলব, আমরা দল হিসেবে বাংলাদেশের সব সমর্থককে হতাশ করেছি। যারা আমাদের খেলা অনুসরণ করেন, সবসময় অনুসরণ করেন তাদের ‘লেট ডাউন’ করেছি। তো আমি দলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি ।”

“আমরা ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে দেশের মানুষকে ভালো কিছু দিতে পারিনি। এটার জন্য আমরা সরি। সামনের দিকে আমাদের এটাই চেষ্টা থাকবে, কীভাবে এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারি।”

হতাশার মাঝেও ইতিবাচক হিসেবে বলা যায় লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের কথা। প্রথমবার কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টে লেগ স্পিনার খেলানোর সুফল পুরোটাই পেয়েছে বাংলাদেশ। সাত ম্যাচে তরুণ লেগ স্পিনারের শিকার ১৪ উইকেট। ওভারপ্রতি রান খরচ ৭.৭৬ করে।

টুর্নামেন্ট থেকে প্রাপ্তির কথা জোর দিয়ে না বললেও রিশাদের প্রশংসা করেন শান্ত। একইসঙ্গে আরও একবার ব্যাটিংয়ের কারণে দুঃখপ্রকাশ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

“ইতিবাচক দিক অবশ্যই বোলাররা... তারা সবাই খুবই ভালো বোলিং করেছে। রিশাদ এরকম একটা টুর্নামেন্টে এসে সবগুলা ম্যাচে ভালো বোলিং করেছে। তো বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও ছিল।”

“তবে ব্যাটিং দিক থেকে আমরা সমর্থকদের হতাশ করেছি। দেশের মানুষকে আমরা বলতে গেলে কষ্ট দিয়েছি। তবে এটাও আমি বলতে চাই, চেষ্টার কমতি ছিল না। শতভাগ দিয়ে সবাই চেষ্টা করেছে। সবাই নিজের কাজে সৎ ছিল। তবে আমরা দিন শেষে আমরা পারিনি। তাই এটার জন্য দলের পক্ষ থেকে সরি।”


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002885103225708