ভর্তি পরীক্ষার আয়ের ৬০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় হয়। যার বড় অংশই ভর্তি পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে যায়। ফির এই টাকা নিয়ে নয়ছয়েরও অভিযোগ আছে।

যেমন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রির আয় থেকে উদ্বৃত্ত আট কোটি টাকা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগ-ভাঁটোয়ারা করার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

শুধু ভর্তি পরীক্ষার আয়ের অনিয়ম নয়, আর্থিক প্রশাসনে শৃঙ্খলা আনতে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিগগির ৪১ দফা সংবলিত সতর্কপত্র পাঠানো হচ্ছে। গতকাল সোমবার ইউজিসির পূর্ণ কমিশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মূলত জুন মাসে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বছরের বাজেট তৈরি হয়। এটিকে সামনে রেখেই এই পরিপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় কমিশনের বৈঠকে। 

সতর্কপত্রে আগামী ১০ জুনের মধ্যে ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের চলতি অর্থবছরের সংশোধিত ও নতুন বছরের প্রাথমিক বাজেট পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরিপত্রে উল্লেখযোগ্য নির্দেশনার মধ্যে আছে-প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার আয়ের সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। বাকি ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করতে হবে। আর এই আয় নিজস্ব আয়ের মধ্যে অবশ্যই দেখাতে হবে। এছাড়া ভর্তি, টিউশন, পরীক্ষা, ল্যাব টেস্ট, বিশেষ কোর্স, বেতন থেকে কর্তনাদি, সম্পত্তি থেকে লব্ধ অর্থ ইত্যাদি অবশ্য নিজস্ব আয় হিসাবে বাজেটে দেখাতে হবে।

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, গত কয়েক বছর থেকে বাজেট পাশের আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি গাইডলাইন দেওয়া হচ্ছে। কোন কোন খাতে বাজেটের অর্থ ব্যয় করা যাবে সেসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। তার আলোকে এবারো সেটি দেওয়া হবে। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে এ সংক্রন্ত পরিপত্র জারি করা হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ওপর ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফির বোঝা কমছে না। বরং ইউজিসির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আসন্ন শিক্ষাবর্ষেও আবেদন ফি আগের চেয়ে ২০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আগেই বাড়িয়েছিল, এবারও সেটি বহাল রাখছে।

ভর্তি ফি বেড়েছে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার সব ইউনিটে আবেদন ফি ৩৫০ টাকা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে আবেদন ফি ছিল ৬৫০ টাকা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার আবেদন ফি ৩০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ, বি, সি এবং ই ইউনিটের আবেদন ফরমের ফি করা হয়েছে ৯০০ টাকা। গতবার ছিল ৬০০ টাকা। তবে ডি ইউনিটের ফি ৬০০ টাকাই রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম  বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার ২০০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবেদন ফি করা হয়েছে ৭৫০ টাকা। এর সঙ্গে আরও ১০০ টাকা ‘প্রসেসিং ফি’ যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ একজন ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে আবেদনের সময় মোট ৮৫০ টাকা দিতে হবে। গতবার সব মিলিয়ে এই ফি ছিল ৬৫০ টাকা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফি আগে থেকেই বেশি। গতবার চূড়ান্ত প্রার্থীদের মোট আবেদন ফি ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)। এবারও ফি একই রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম।

কৃষি এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত হয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। গতবার জিএসটিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদাভাবে ৬৫০ টাকা পর্যন্ত আবেদন ফি নিয়েছিল। 

তবে এবার শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম এবং পছন্দের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়, বিষয় নির্ধারণসহ কয়েকটি সুপারিশ করেছে ইউজিসি। আগামী সেপ্টেম্বরে ভর্তি পরীক্ষা। যদিও এখনো আবেদন ফির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028800964355469