ভাঙা হচ্ছে এরশাদ শিকদারের ‘স্বর্ণকমল’

খুলনা প্রতিনিধি |

খুলনার একসময়কার সন্ত্রাসীদের গডফাদার এরশাদ শিকদারের আলোচিত বিলাসবহুল বাড়ি ‘স্বর্ণকমল’ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বাড়িটি খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গার মজিদ সরণিতে অবস্থিত। গতকাল বুধবার সকাল থেকে দোতলা এ ভবনের ছাদ ভাঙা শুরু হয়। তবে এ সময় এরশাদ শিকদারের পরিবারের কাউকে সেখানে দেখা যায়নি।

ভাঙার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক রবিউল জানান, বাড়িটির অর্ধেক ভেঙে ফেলা হবে। সেখানে ১০ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। এরশাদ শিকদারের ছেলেরাই ১০ তলা ভবন নির্মাণ করবেন।

জানা গেছে, এরশাদ শিকদার তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। ছেলে মনিরুজ্জামান শিকদার জামাল, কামাল শিকদার এবং হেলাল শিকদার পেশায় ব্যবসায়ী। মেয়েদের মধ্যে জান্নাতুল নওরিন এশা ২০২২ সালের ৩ মার্চ আত্মহত্যা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত খুলনার রেলওয়ে ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন এরশাদ শিকদার। ৬০টিরও বেশি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তিনি। জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে প্রবেশ করার পর আরো ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন খুলনার ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটের এই কুলি সরদার। পরে এরশাদ শিকদার খুলনা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারও নির্বাচিত হন। ওই সময় তিনি নগরীর সোনাডাঙ্গার মজিদ সরণিতে নির্মাণ করেন বিলাসবহুল বাড়ি ‘স্বর্ণকমল’।

১৯৯৯ সালে ওয়ার্ড কমিশনার থাকা অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন এরশাদ শিকদার। ২৪টি হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন তার দেহরক্ষী নুরে আলম। ২০০৪ সালের ১০ মে মধ্যরাতে খুলনার জেলা কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এরশাদ শিকদারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপর থেকে এরশাদ শিকদারের বহু অপকর্মের সাক্ষী হয়ে আছে এই ‘স্বর্ণকমল’। একনজর এই বাড়িটি দেখার জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসতে থাকে। 

বাড়িটিতে গোপন কুঠুরি, অস্ত্রভাণ্ডার এবং বিভিন্ন গোপন স্থানে নগদ কোটি কোটি টাকা লুকানোর গল্পও শোনেন সাধারণ মানুষ। শহরের নামিদামি ব্যক্তিদের যাতায়াত ছিল স্বর্ণকমলে। প্রায়ই জলসা বসত এই বাড়িতে। যার জন্য সাধারণ মানুষের খুব আগ্রহের একটি জায়গা ছিল স্বর্ণকমল। সবার মুখে আলোচনা আর সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ওই বাড়িটি।

এদিকে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর স্বর্ণকমলে বসবাস করতেন এরশাদ শিকদারের প্রথমপক্ষের স্ত্রীসহ ছেলেমেয়েরা। সেখানে তারা দোতলায় পোল্ট্রি মুরগির ফার্মও করেছিলেন। এরশাদ শিকদারের মৃত্যুর দীর্ঘ ১৯ বছর পর গতকাল বুধবার সকাল থেকে নির্মাণ শ্রমিকরা যখন স্বর্ণকমল বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করেন, ঠিক তখন উৎসুক মানুষ সেখানে ভিড় জমান। এমনকি সংবাদকর্মীরাও সেখানে হাজির হন। এ সময় ছবি তুলতে গেলে বাড়ির ভেতর থেকে সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারা হয়। তবে এ ব্যাপারে বাড়ির মালিকপক্ষের কারো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি - dainik shiksha আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ - dainik shiksha শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন - dainik shiksha অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024330615997314