ভারতে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিলো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বাংলা-সহ মোট পাঁচটি ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেয়া হলো।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে বাংলাকে ‘ধ্রুপদী ভাষা’র এই স্বীকৃতি সংক্রান্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি লেখেন, দীর্ঘদিন ধরে এই স্বীকৃতি আদায়ের জন্য চেষ্টা করছে তার সরকার। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে ওই দাবির সপক্ষে গবেষণাপত্রও পাঠানো হয়েছে। সেই দাবিই মেনে নিয়েছে কেন্দ্র।
এই খবরে দারুণ খুশি জানিয়ে মমতা বলেন, অবশেষে বাংলাকে ধ্রপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত সরকার। দীর্ঘ দিন ধরে এই স্বীকৃতি ‘ছিনিয়ে’ আনার চেষ্টা করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত গবেষণার তিনটি খণ্ড কেন্দ্রের কাছেও পাঠানো হয়েছে। অবশেষে ভারতের ভাষা সংস্কৃতির শিখরে পৌঁছেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, কোনও ভাষার ইতিহাস বা প্রাপ্ত নথির বয়স যদি ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার বছর হয়, আদি ভাষা এবং সাহিত্যের সঙ্গে বর্তমানের ভাষা এবং সাহিত্যের ফারাক যদি স্পষ্ট হয় তবেই সেই ভাষাকে ধ্রুপদীর স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই স্বীকৃতি পেলে সেই ভাষা নিয়ে গবেষণা এবং সাহিত্য চর্চার জন্য বিশেষ অনুদান দেয় কেন্দ্র।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলাদা বিভাগ বা কেন্দ্র গঠন করা হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সেই ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেলে তাতে লেখা প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, শিলালিপি, এবং দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থসমূহ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ উদ্যোগী হওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই স্বীকৃতি প্রাপ্ত ভাষাকে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
তাই ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পাওয়ার ফলে বাংলার সাহিত্যিক, গবেষক ও ভাষাবিদদের জন্য বিশেষ পুরস্কার ও সম্মাননার ব্যবস্থাও করা হবে। তামিল, সংস্কৃত, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম, ওড়িয়ার সঙ্গে ধ্রুপদী ভাষার তালিকায় জুড়লো বাংলা, মারাঠি, পালি, অহমীয়া এবং প্রাকৃত।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, আমাদের সরকার ভারতের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার কাজ করে। আমরা আঞ্চলিক ভাষাগুলিকে জনপ্রিয় করার বিষয়ে দায়বদ্ধ। আমি অত্যন্ত খুশি যে, অসমীয়া, বাংলা, মারাঠি, পালি ও প্রাকৃতকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই ভাষাগুলি অপূর্ব, তারা আমাদের অসাধারণ বৈচিত্রের সাক্ষ্য বহন করে।