ভারতে ৪২ হাজার ৫০০ শিক্ষকের প্যানেল বাতিল করার হুঁশিয়ারি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় চরম অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ফের হুঁশিয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এরকম চলতে থাকলে ২০১৬-এর নিয়োগ প্রক্রিয়ার গোটা প্যানেল (মোট ৪২ হাজার ৫০০ শিক্ষক) বাতিল করে দেবো।  

ক্ষোভ দেখিয়ে বিচারপতি এদিন বলেন, ঢাক সমেত ঢাকিদের কীভাবে বিসর্জন দিতে হয় তা আমি জানি। যদিও ঢাকি বলতে এদিন ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন বিচারপতি তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকমে ভর্তি বিজ্ঞাপন দিন ৩০ শতাংশ ছাড়ে

২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরির আবেদন জানিয়ে মামলা করেছিলেন মোট ১৪০ জন প্রার্থী। তাদের অভিযোগ, অনেকেই চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। একইসঙ্গে এই মামলা সংক্রান্ত সব নথি বিচারপতি মামলাকারীদের পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ ডিসেম্বর।

জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে প্রাথমিকের শিক্ষক পদে নিয়োগের একটি তালিকায় মোট ২৬৯ জনের নাম ছিল। ওই ২৬৯ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধেই চূড়ান্ত অনিয়ম করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি হাইকোর্টের সামনে আসতেই এই বিষয়ে দুর্নীতির আশঙ্কা করেন খোদ বিচারপতিও। বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে এদিন পাল্টা গ্রহণযোগ্য কোনো উত্তর দিতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।

বিরোধীদের অভিযোগ, সাড়ে ৪২ হাজারের সিংহভাগ মাথাপিছু মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছে। যদিও এটা অভিযোগ মাত্র, কারণ এর কোনো তথ্য দেখাতে পারেননি বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিমত, ঢাকিদের শুধু দোষ দিলে হবে না। যারা ঢাক বাজাতে বলেছিল, তারা যেন এবার ছাড় না পায়। বিচারপতি যেন শুধু ঢাকিতেই যেনো থেমে না থাকেন। পূজা কর্তাকেও যেন বিসর্জন দেন।

২০১৪ সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা হয়েছিল। এর ভিত্তিতে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালে ফল প্রকাশিত হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ওয়েবসাইটে। সেখানে দেখা যায়, মেধা অনুযায়ী যাদের চাকরি পাওয়া উচিত তারা পাননি। কম নম্বরপ্রাপ্তরা চাকরি পেয়ে গেছেন। যারা চাকরি পাননি, তাদের একাংশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

বিচারপতি মঙ্গলবার বলেন, তাদের না পাওয়ার কারণ হয়তো তারা মানিকবাবু পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি। প্রসঙ্গত, মানিক ভট্টাচার্য হলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সাবেক সভাপতি। যিনি এখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলে রয়েছেন। বিচারপতি বলেন, যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই সিস্টেম বলে কিছু নেই। গোটা প্যানেলটাই এবার বাতিল করে দেব। সেদিনই বলব ঢাকি সমেত বিসর্জন দেওয়ার মানে কী?


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.01789116859436