ঢাকার মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে হাতের অর্ধেক বিচ্ছিন্ন হওয়া শিশু সাঈদের অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। ব্যথায় কাতর শিশুটি প্রতিনিয়ত কান্না করছে। রাতে ঘুমাতেও পারেনি সে, চিৎকার করেছে। এতে নির্ঘুম রাত কেটেছে স্বজনদেরও।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) স্বজন ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। শিশুটির চিকিৎসায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ৩০ হাজার টাকা সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
এদিকে ঘটনা খতিয়ে দেখতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও আলাদা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় চিড়িয়াখানাও একটি তদন্ত কমিটি করেছে।
শিশুটির নানা শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে কান্নাকাটি করছে সে। হাতে ব্যান্ডেজ পরানো হয়েছে। গতকাল হাসপাতালে আনার পর হাতে অপারেশন হয়। তার বিচ্ছিন্ন হাত এখন হায়নার পেটে।
স্বজনরা জানিয়েছেন, তার বয়স মাত্র দুই বছর। ফলে তেমন ভালোভাবে কথা বলতেও পারে না শিশুটি। বারবার হাতের দিকে তাকাচ্ছে আর কান্নাকাটি করছে সে। এদিকে কর্তব্যরত নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা গত বৃহস্পতিবার শিশুটিকে নিয়ে আসার পর চিকিৎসা দিয়েছেন। কনুই থেকে হাত ছিঁড়ে যাওয়ায় শিশুটির রক্তপাত হয়েছে। পরে বিচ্ছিন্ন হাতে অপারেশন করা হয়। এরপর থেকে তার স্যালাইন চলছে।
আহত শিশুর স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর নগরখাল এলাকা থেকে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যান তারা। সঙ্গে শিশু সাঈদও ছিল। হায়েনার খাঁচার কাছে যাওয়ার পর কোনো এক সময় শিশুটি খাঁচার কাছে চলে যায়। এরপর সে খাঁচার ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিলে হায়েনা কামড়ে ধরে। পরে তার নানা দৌড়ে এসে হাত ছাড়িয়ে নিলেও হাতের কবজি পর্যন্ত খুলে হায়েনার মুখে চলে যায়। এরপর শিশুটিকে তারা প্রথমে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। পরে তারা পঙ্গুতে নেওয়ার পরামর্শ দিলে সেখানে ভর্তি করেন।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বর্তমানে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শিশুটির চিকিৎসা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এরই মধ্যে তাদের কাজ শুরু করছে।