ভিকারুননিসা অধ্যক্ষের সমর্থনে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ যা বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অধ্যক্ষের চাকরির মতো এতো চ্যালেন্জিং ও ঝুঁকিপূর্ণ চাকরি এখন কমই আছে। মানসম্মান নিয়ে যেতে পারলে বেঁচে যাই। আপোষ করে বা ভাগবাটোয়ারায় অংশ নিয়েও মানসম্মান বাঁচানো যায়, আবার নিষ্ঠা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেও মানসম্মান বাঁচানো সম্ভব। পরেরটার জন্য হয়ত কিছুটা গালমন্দ শুনতে হতে পারে।


ঢাকা কলেজে অধ্যক্ষ পদে পদায়নের পর আমাকে ফুল দিতে এসে কামরুন নাহার বলেছিলেন, সে খুব চাপে আছেন, যাতে খেয়াল রাখি। করোনা, নানাবিধ অন্যায় আবদার, অন্যদিকে নীতির প্রশ্নে মন্ত্রণালয়ের অনড় অবস্হান।নানা অপমান, অসম্মান আর হুমকিতে মেজাজ ধরে রাখা কঠিন। প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম মোকাবিলায় মন্ত্রণালয় কামরুনকে সেখানে অধ্যক্ষ হিসেবে সাময়িক পদায়ন করে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার বাইরে তার কাজ করার সুযোগ নেই। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আসে নি। ভর্তি, আর্থিক অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে দেশের স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠান বেশ কয়েকবছর নিউজের শিরোনাম হচ্ছে, যা কাম্য নয়। ফোনে উত্তেজিত করে বক্তব্য রেকর্ড করা, অবশ্যই পরিকল্পিত। তাই এটি এডিট করে  ছড়িয়ে দেয়া অস্বাভাবিক নয়। অধ্যক্ষের কিছু কথা পাবলিক করা হয়েছে, যা সত্য ধরে নিলেও এসব কথা পাবলিকলি তিনি বলেন নি। গোপনে বেআইনিভাবে রেকর্ড করে অসৎ উদ্দেশেì ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবু কিছু ভদ্রলোকের এতে জাত যায়। অথচ অনিয়ম দুর্নীতিতে তাদের বিরাট আস্থা!

মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্ত করছে, আমরা আস্থা রাখতে চাই। দেশের নামকরা এ প্রতিষ্ঠানকে বারবার অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। এটি সফল হতে দেয়া যাবে না। বর্তমান সরকার দেশের সব স্বায়ত্বশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি কলেজ, সরকারি স্কুল (কয়েক হাজার)  ভর্তির ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা  নিশ্চিত করেছে। এটি সরকারের বিরাট সাফল্য। এতে সরকারের রাজনীতি বা ছাত্র রাজনীতির কোন ক্ষতি হয় নি। মেধাবীদের ভর্তি নিশ্চিত হয়েছে। সেখানে রাজধানীর ২/৩ টি প্রতিষ্ঠানকে কেন ছাড় দিতে হবে? সরকারের এমপিও নেবে, আবার বার বার বেতনসহ বিভিন্ন ফি বাড়িয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ার দরকার আছে কিনা, তাও দেখতে হবে। তখন সেদিকে সবার লোলুপ নজর থাকে।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে কোটি টাকা খরচ করে গভর্নিং বডির স্থায়ী অফিস কীভাবে হয়, মাথায় আসে না। তাহলে তাদের স্থায়ী নিয়োগ দিলেই হয়। এখনতো সব দায় অধ্যক্ষের। কারণ, তিনি ডিডিও। তাকে দুদক, জেল, চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদোন্নতি স্থগিত সব শাস্তির মোকাবিলা করতে হয়। পত্রিকা বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় শিরোনাম হতে হয়। সামান্য বিচ্যুতিও কেউ মেনে নেয় না। গভর্নিং বডির সর্বোচ্চ শাস্তি, এটি ভেঙ্গে দেয়া। তাও তারা অযোগ্য হয় না, আবার নির্বাচিত হয়ে ফিরে আসতে পারেন।

আশা করছি প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, অভিভাবক ও দেশের সচেতন জনগন সতর্ক থাকবেন। এসব প্রতিষ্ঠান যাতে সার্বিকভাবে শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেটিও কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই বিবেচনায় নেবেন। ভর্তির স্বচ্ছতা নিশ্চিত জরুরি। না হলে ভর্তির দায়িত্ব অন্যরা নিক। শিক্ষকরা শুধু শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করবেন, এমন আইন করলে অধ্যক্ষ বেঁচে যান।

 

লেখক: আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, অধ্যক্ষ, ঢাকা কলেজ 

প্রাক্তন সভাপতি

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028910636901855