প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী কেয়া আক্তার রত্না (২২)। রোববার সকাল ৭ টার দিকে ইনস্টিটিউটের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রী নিবাসের ৩০৪ নম্বর কক্ষ থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।
ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় কেয়া আক্তার রত্নার প্রেমিক ইনস্টিটিউটের একই সেমিস্টারের ছাত্র অন্তর আলীকে (২২) হোস্টেল থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্তর সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা গ্রামের রাজু আহমেদের ছেলে। সে তার মা নার্গিস আক্তারের সঙ্গে ঢাকার গাজীপুরে হাতিয়াব পৌরসভার দোয়েল গ্রামে বসবাস করতো।
নিহত কেয়া পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা পৌরসভার গোলখালি ছোট গাবুয়া গ্রামের মো. বশির মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় নিহত কেয়ার বাবা বশির মিয়া বাদি হয়ে মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন প্রশিক্ষক এবং হোস্টেল সুপার জুথিকা পাল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রাত ৩টার দিকে হোস্টেল থেকে মুঠোফোনো জানানো হয় ৩০৪ নম্বর কক্ষের কেয়া আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আমি তাৎক্ষণিক অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক স্যার এবং এবং এয়ারপোর্ট থানায় ফোন করে জানাই। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সুরতহাল শেষ করে মৃতদেহ উদ্ধার করে সকাল ৭টার দিকে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, যতটুকু জানতে পেরেছি, কেয়া আক্তার রত্নার সঙ্গে একই সেমিস্টারের অন্তর আলীর গত দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। ঘটনার দিন তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে বাগবিতণ্ড হয়। এক পর্যায় অন্তরকে ভিডিও কলে রেখেই ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় কেয়া। আর ভিডিও কলে রেখে কেয়ার গলায় ফাঁস দেয়ার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে অন্তর।
আটক অন্তর আলীর রুমমেট আহসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কেয়া এবং অন্তরের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। তবে গতরাতে কি হয়েছে তা আমার জানা নেই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ হেলাল উদ্দিন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, নিহত কেয়া আক্তারের বাবা বশির মিয়া বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অন্তরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে অন্তর আলীকে হোস্টেল থেকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি বলেন, অন্তর নামের ওই ছাত্র একাধিক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতো। বিষয়টি নিয়ে কেয়া এবং অন্তরের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এমনকি এ নিয়ে কেয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অন্তর। এজন্যই অন্তরকে ভিডিও কলে রেখে রাত আড়াইটার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে কেয়া। আর এসব কথা অন্তর স্বীকার করেছে।