ভুয়া সনদে ৯ বছর চাকরি, প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি |

কুষ্টিয়ার কুমারখালী সরকারি কলেজে ভুয়া সনদে ৯ বছর ধরে চাকরি করছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক সাবিরা খাতুন। কলেজটি জাতীয়করণ হওয়ার পর যাচাই-বাছাইয়ে তার নিবন্ধন সনদ ভুয়া বলে প্রমাণিত হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছেন।

এ ছাড়া জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া সনদে চাকরির অপরাধে ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, যার মামলা নং-০৯, তাং ১৪ অক্টোবর।

কুমারখালী সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক সাবিরা খাতুন। ছবি: সংগৃহীত

জানা যায়, কুমারখালী বেসরকারি ডিগ্রি কলেজ ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট জাতীয়করণ হয়। কলেজটি জাতীয়করণ ঘোষণার পর সনদ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি পাঠানো হয় এনটিআরসিএতে।

তার মধ্যে ২৯ শিক্ষকের ফল পাওয়া যায়। সনদ যাচাইয়ে আরবি ও ইসলামী শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক সাবিরা খাতুনের নিবন্ধন সনদ ভুয়া প্রমাণিত বলে অতিসম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ১৬৯৭ স্মারকে সনদ যাচাইসংক্রান্ত চিঠি গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

এ ছাড়া কলেজের অধ্যক্ষকে ই-মেইল মারফত এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়। ভুয়া সনদে চাকরির অপরাধে ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষকে অবগত করার জন্য।

এনটিআরসিএর প্রেরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ব্যাচের নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মর্মে সাবিরা খাতুনের দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদের রোল নম্বর ২১৪১০৭৯৬, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮০৫৫৯১১৪ যাচাইকালে সনদটি ভুয়া প্রমাণিত হয়।
এ ছাড়া নিবন্ধন পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ২৭ এবং তিনি ওই নিবন্ধন পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুয়া সনদে সাবিরা খাতুন ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রভাষক পদে কলেজে নিয়োগ লাভ করেন।
এর পর ২০১১ সালের ১ মে তিনি এমপিওভুক্ত হন। এমপিওভুক্তির পর থেকে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে অবৈধপন্থায় তিনি সরকারি আর্থিক সুবিধা ভোগ করছিলেন।

কুমারখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শরিফ হোসেন জানান, প্রথমে প্রভাষক সাবিরা খাতুনের নিবন্ধন সনদ ভুয়া সংক্রান্ত বিষয়টি এনটিআরসিএর ওয়েবসাইট মারফত জানতে পারি। পরে গত ১৩ অক্টোবর চিঠি পেয়েছি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

১৪ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কলেজের ৫২টি নিবন্ধন সনদ পাঠানো হয় এনটিআরসিএতে, তার মধ্যে শুধু একটি সনদ জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে।

কুমারখালী থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মামুনুর রশিদ বলেন, কুমারখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শরিফ হোসেন অভিযুক্ত প্রভাষকের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করেছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028829574584961